হোম > সারা দেশ > রংপুর

কুড়িগ্রামে বন্যায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট

আরিফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম

‘জায়গায় আছি। আইজ সেহানেও পানি উঠতাছে। এহানেই এক বেলা রাইন্দা সারা দিন তাই খাই। চুলা রাখমু সেই জায়গাও পানিতে তলাইতাছে। অহন রান্দোনেরও উপায় নাই। খাওনের পানির খুব কষ্ট। টিউবওয়েল তলায় গ্যাছে। পচা পানি কি খাওন যায়? উত্তর থাইকা একবার পানি আইনা সারা দিন সেই পানি খাই।’

খাওয়ার পানির সংস্থান প্রশ্নে বলেন সবুরা। সবুরার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্যবর্তী বতুয়াতলীর চরে। গতকাল বৃহস্পতিবার সবুরার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন ঘড়িতে সময় বেলা ২টা। বাড়ির পুরুষ সদস্যরা নৌকায় গরু নিয়ে পাশের চরে উঁচু স্থানে রাখতে গেছেন। নারী ও শিশুরা বাড়িতে পানিবন্দী। বাড়ির চারপাশ দিয়ে বিশাল জলরাশি নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র।

গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার তথ্যে জানা গেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। আশঙ্কাময় এই সতর্কবার্তা সবুরা ও তাঁর প্রতিবেশীদের জন্য অজানা আতঙ্ক।

আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া প্রশ্নে সবুরা বলেন, ‘কেমনে যাব। খরচা আছে না। বাড়িতে থাইকা দেহি কী হয়!’

সবুরার বাড়ির পাশেই মৎস্যজীবী আলামিনের সংসার। তাঁর বাড়িতেও বুকসমান উচ্চতায় পানি। তলিয়ে আছে বতসঘরসহ সবকিছু। শুধু গরু-ছাগল রাখার ঝুপড়িটা সামান্য জেগে আছে। সেই ঝুপড়িতে ১০-১২টি গরু, কয়েকটি ছাগল আর মুরগিসহ তিন দিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন আলামিন। সেখানে দেখা মিলল আলামিনের স্ত্রী আইরিনের। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আইরিন তিন বছরের শিশুসন্তান আর কিশোরী ননদকে নিয়ে ঝুপড়িতে রাখা চৌকির ওপর বসে আছেন।

সংবাদকর্মীদের দেখে অনেকটা অপ্রস্তুত আইরিন বলেন, ‘খাওয়াদাওয়ার সমস্যা। স্বামী বাজার করতে পারেন না। ঘরে থাকনেরও কোনো উপায় নাই। সবাই মিলে গরুর ঘরে থাকি। এহানেই রান্দি, এহানেই খাই। বৃষ্টি আসলে বইসা থাকতে হয়। খাওয়ার পানির খুব কষ্ট।’

চর বতুয়াতলীর গৃহবধূ আইরিন আর সবুরার মতো ব্রহ্মপুত্রের চরজুড়ে এখন বাসিন্দাদের টিকে থাকার লড়াই। ঘোলা পানি নিয়ে উপচেপড়া এই নদ প্লাবিত করেছে হাজারো পরিবারের বসতভিটা। টিউবওয়েল, শৌচাগার কিংবা চলাচলের রাস্তা—সবকিছুই তলিয়েছে। পানিবন্দী অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। নারী-শিশু ও গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে বানভাসি পরিবারগুলো।

গতকাল দুপুরে কালিরআলগা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বয়োবৃদ্ধ বাসিন্দা সন্তোষ আলীর বাড়ির চারটি ঘরেই পানি। স্ত্রীসহ তিনি খাটের ওপর বসে আছেন। জিনিসপত্র সব উঁচু স্থানে তুলে রাখা।

সন্তোষ বলেন, ‘চার দিন ধইরা ঘরে পানি। খড়ি নাই। চুলা জ্বালানো যায় না। রান্নার কষ্ট। এক বেলা খাইলে আর খাওন হয় না।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ ও জাহাঙ্গীর বলেন, ‘খড়ি আর চুলার অভাবে রান্দন হয় না। না খাইয়ায় থাকতে হয়। যার খড়ি আছে, তারা নাওয়ে (নৌকায়) রাইন্দা খায়।’

যাত্রাপথে গ্রামগুলো দেখে মনে হচ্ছিল ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে সব ভাসমান বসতি। যাত্রাপুর ইউনিয়নের শিবেরগাছী, পোড়ারচর, গোয়াইলপুরের চর, খোকারচর, উলিপুরের সাহেবের আলগা ইউনিয়নের চর আইড়মারি, দই খাওয়ার চরসহ ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরগুলো উজানের পানিতে প্লাবিত। এসব চরের প্রায় সব বাসিন্দার বসতঘরে পানি। চলাচলের রাস্তার চিত্র বর্ণনা শুধুই বাহুল্য। এমন মানবেতর পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন খাদ্যসহায়তা বিতরণে জোর দিয়েছে।

দেড় কিলোমিটার দূরে পুলিশের ফায়ারিং রিহার্সাল, বাড়িতে গুলিবিদ্ধ কিশোরী

ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির মহোৎসব

গাইবান্ধায় দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে গিয়ে প্রাণ গেল ইউপি সদস্যের

পঞ্চগড়ের মানুষ চাইলে সারজিস কিংবা কোনো তরুণ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন

মিজানুর রহমান আজহারী লালমনিরহাট যাচ্ছেন শনিবার

শুধু একটি ভোটের জন্য এই গণ-অভ্যুত্থান হয়নি: নুরুল হক নুর

দিনাজপুরের সাবেক এমপি রেজিনা ইসলাম মারা গেছেন

গোবিন্দগঞ্জে চাঁদার দাবিতে মৎস্য ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

এবার গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে গেল দিনাজপুরের হাবিপ্রবি

বিএনপি নেতার পাহারায় সরকারি জমিতে অবৈধভাবে পাকাঘর নির্মাণের অভিযোগ

সেকশন