হোম > সারা দেশ > রংপুর

 ‘তিস্তা হামার বাড়িও খাইল, বাদামও খাইল’

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় খরা ও অতিবৃষ্টি ও বন্যায় চরাঞ্চলের কৃষকের চাষাবাদ করা বাদামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিস্তা নদীতে হঠাৎ বন্যার কারণে পানিতে তলিয়েছে বাদামখেত। এসব বাদাম জমি থেকে তুলে আনলেও রোদ না থাকায় শুকানো যাচ্ছে না। ভেজা বাদামে অঙ্কুর গজিয়ে নষ্ট হচ্ছে। এতে খরচের টাকা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে বলে জানান কৃষকেরা। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর ৩৬০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। ৩৬০ হেক্টর জমিতে বাদাম উৎপাদন হওয়ার কথা ৬৮৪ মেট্রিক টন। কিন্তু এ বছরে অতি খরা আর বন্যার কারণে উৎপাদন হয়েছে ৫৪০ টন, যা চাহিদার থেকে ১৪৪ হেক্টর কম। যার বাজারমূল্য ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৮ টাকা। 

তবে বাদামচাষিদের দাবি, এ বছর অতিখড়া ও বন্যার কারণে প্রায় ২৫ হেক্টর জমির বাদাম নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির মূল্য দাঁড়ায় ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ১৫০ টাকা। 

উপজেলার চর ছালাপাক, আলফাজটারী, শেখপাড়া, মহিপুর, চর ইচলি, শকরদহসহ বেশ কয়েকটি চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, রোদ না থাকার কারণে পানিতে তলিয়ে থাকা বাদামগুলো গাছ থেকে ছাড়িয়ে রাস্তার ধারে পলিথিনে বিছিয়ে রেখেছে। আবার অনেকে বাদাম গাছ থেকে ছাড়াতে না পেরে স্তূপ করে রেখেছে। সেখানেই অনেক বাদাম থেকে অঙ্কুর বেরিয়েছে। 

উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের আলফাজটারী এলাকার আব্দুস সাত্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রায় ১৫০ শতক জামিত ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার মতো খরচ করি বাদাম চাষ করছি। প্রথমে খরার কারণে প্রায় ৪০ শতক জামির বাদাম নষ্ট হওয়া গেইছে। বাকি ১১০ শতক জমিত মেশিন দিয়া কোনো রকমে খেত আটকাই। বাদাম মোটামুটি ভালোই হয়েছিল। আর ১০-১৫ দিন গেইলে তুলবার পাইনো হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘হঠাৎ তিস্তাত পানি বাড়ায় ৫০ শতক জমির বাদাম তুলবার পাইছি আর বাকিগুলো তুলবারে পাই নাই। সউগ তলে গেইছে। তাতে এবার হামার এ পাশে (এদিক) ভাঙনটা বেশি শুরু হইছে, যার কারণে সমস্যাটা বেশি।’ 

আজহারুল ইসলাম নামে এক বাদামচাষি বলেন, ‘কিসের কী বাদাম তুলমো, এমনভাবে বাড়িঘর ভাঙা শুরু হইছে, বাড়িঘর বাছামো না বাদাম তুলমো। বাদাম তোলার সময়ে তো বন্যাটা আসছে। এবার তিস্তা হামার বাড়িও খাইল, বাদামও খাইল। কিছু বাদাম তুলবার পাইছি, রইদ (রোদ) না থাকায় তোলা বাদামগুলাও নষ্ট হওয়া যায়চলো। কী আর করার সরকার যে হামার মুখের দিকে না তাকায়।’ 

কথা হয় লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চরমহিপুর এলাকার মোস্তাফিজারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক একর জমিতে বাদাম চাষ করছিলাম। তিস্তার পানিত ঢুবি গোসল। উপায় না পেয়ে বুকসমান পানি থেকে বাদাম তুলেছি। কিন্তু এখন শুকাতে না পেরে গাজ (অঙ্কুর) উঠি নষ্ট হওয়া যায়চোল। কিছু বাদামের কোনো রকমের গায়ে পানি শুকাইছে তাতে ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করি দিছু।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিস্তায় বন্যা আসার আগে থেকেই আমরা চরাঞ্চলের চাষিদের বাদাম তোলার পরামর্শ দিয়ে এসেছি। অনেক চাষি আমাদের কথা শুনে বাদাম তুলে নিয়েছেন। আর অল্পসংখ্যক চাষি বাদাম কিছুটা তুলে নিতে পারেনি। তবে রোদ না থাকার কারণে জমি থেকে তুলে নেওয়া বাদামগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।’

কাউনিয়ায় মহাসড়কে ঝরল দুই কৃষকের প্রাণ

রংপুর-৩ আসনে জি এম কাদেরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

খামার থেকে গরু লুট, আন্তজেলা ডাকাত চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার

গুলিবিদ্ধ হাদির মৃত্যু: গঙ্গাচড়ায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল

ওসমান হাদিকে গুলি মানে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা: আল মামুন

গাইবান্ধায় গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে থেকে ৪ ককটেল উদ্ধার

গঙ্গাচড়ায় হাত-পা বাঁধা যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ঠাকুরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

পীরগঞ্জে ধানখেত থেকে অটোভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার