বিয়ের তিন দিন পর নববধূকে রেখে নিখোঁজ হন লালমনিরহাটের রুবেল মিয়া (২৩) নামের এক যুবক। নিখোঁজের ১০ দিন পর ঢাকার একটি নবনির্মিত ভবনের ১০ তলা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (দারুস সালাম থানা) বাদী হয়ে সেখানে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
আজ শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট গ্রামে রুবেল মিয়ার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহত রুবেল মিয়া লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে।
নিহত ব্যক্তির পরিবার জানায়, চলতি মাসের ২ জানুয়ারি একই এলাকার আপিয়ার রহমানের মেয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে রুবেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের তিন দিন পর সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে নিখোঁজ হন রুবেল। এরপরই তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে না পেয়ে ওই দিনই রুবেল মিয়ার বাবা নুরুল আমিন লালমনিরহাট সদর থানায় ছেলে নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এদিকে স্থানীয় মাহফুজার রহমান নামে এক যুবক তাঁর ফেসবুক আইডিতে রুবেল মিয়ার ছবিসহ নিখোঁজের একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে রুবেলের খোঁজ পেতে মোবাইল নম্বরও উল্লেখ করেন তিনি। এরপর ওই নম্বরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যোগাযোগ করে নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজখবর নেন এবং মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন।
মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে নিহত রুবেলের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
রুবেল মিয়ার স্ত্রী জানান, বিয়ের তিন দিন পর অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি তাঁর বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা। তাই তাঁর স্বামী তাঁকে সব গুছিয়ে রাখতে বলেন। বাজার থেকে শেভ করে এসে দুপুরের পর তাঁরা রওনা দেবেন। কিন্তু তাঁর স্বামী আর ফিরে আসেননি।
রুবেলের বাবা নুরুল আমিন বলেন, ‘রুবেল আমার একমাত্র আদরের ছেলে। কয়েক দিন আগে ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দিয়েছি। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে কিডন্যাপ করে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের নিকট ছেলে রুবেল হত্যার বিচার চাই।’
রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফা বলেন, ‘তাঁকে অপহরণ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটির সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করছি।’
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শাহা আলম জানান, ‘ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে রুবেলের বাবা নুরুল আমিন থানায় জিডি করেছিলেন। পরে ঢাকায় একটি ভবনে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। ভবনের নৈশপ্রহরীকে আটক করেছে ঢাকার দারুস সালাম থানার পুলিশ।’