কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মামলার তদন্তের সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই বাদীপক্ষের এক নারীর পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলাসহ দুই নারীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিবাদী পক্ষের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের পুটিমারী এলাকায় বাদীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিবাদী পক্ষের দাবি উল্টো তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বাদীপক্ষ। এদিকে চিলমারী থানার ওসি মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৫ সেপ্টেম্বর জেলে সম্প্রদায়ের কাছে চাঁদা দাবি করাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার রামচন্দ্র দাস স্থানীয় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে চিলমারী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি পুলিশ মামলা হিসেবে নেয়। শুক্রবার সকালে চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ওই এলাকায় বাদীর বাড়িতে যান মামলার তদন্তে। ঘটনাস্থলে বাদী-বিবাদী দুপক্ষই উপস্থিত ছিলেন। এর একপর্যায়ে পুলিশ মামলার তদন্তের সময় মামলার আসামি ফুলমিয়া ও আসামি মাসুদের মা ও বোন বাদীপক্ষের রাম চন্দ্র দাসের স্ত্রী চম্পা রানী, ইদ্রানী ও লক্ষ্মীকে মারধর করেন।
ভুক্তভোগী জেলে রাম চন্দ্র দাস বলেন, ‘ওসি স্যার আসছে মামলা তদন্ত করতে। তদন্ত করে বলছে অভিযোগের তেমন কিছু নাই। এ কথা বলার পর বিবাদী পক্ষের লোকজন আমার পরিবারের ওপর হামলা করে। আমার স্ত্রীর কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে বিবাদী পক্ষের মিলন মিয়া বলেন, ‘আমাদের লোকজন কোনো মারধর করেনি। বরং রাম চন্দ্রের পরিবার নিজের কাপড় নিজে ছিঁড়ে ফেলেছে। উল্টো আমার বাড়িতে হামলা করেছে। এসে দেখে যান।’
চিলমারী মডেল থানার (ভারপ্রাপ্ত) (ওসি) প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘মামলার তদন্তে গিয়েছিলাম, আমাদের সামনে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটে নাই। ওখানে এলাকার অনেক গণ্যমান্য লোকজন ছিলেন।’
উল্লেখ, উপজেলার পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকার জেলে সম্প্রদায়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি, বিনা মূল্যে মাছ নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছে একই এলাকার কতিপয় যুবক। বর্তমানে জেলে সম্প্রদায়ের রাম চন্দ্র দাসের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী রাম চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর চিলমারী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি পুলিশ মামলা হিসেবে নেয়। এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন ওই এলাকার মিলন মিয়া (৪০), নয়ন মিয়া (৩৭), মাসুদ মিয়া (৩০), সুমন মিয়া (৩৫)। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচজন রয়েছেন।