ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছেন কৃষকেরা। বছরে ১০০ কোটি টাকার সবজি উৎপাদিত হয় এ গ্রামগুলোতে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এদিকে মৌসুমভিত্তিক নানা সবজি চাষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি দূর করছেন সংসারের অভাব।
ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এই ইউনিয়নের মধ্যে বাগের হাট, চণ্ডীপুর, নীলার হাট, গুঞ্জরগড় ও চকহলদি গ্রামে বছরে উৎপাদিত হচ্ছে দেড় হাজার টন সবজি।
গ্রামগুলোর উৎপাদিত শাকসবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাট-বাজারে। এখান থেকেই বছরে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সবজি। যুক্ত করেন কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ।
গ্রামগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজি মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, বেগুন, ঢ্যাঁড়স, কাঁকরোল, করলা, পটোলসহ বিভিন্ন সবজি বাণিজ্যিকভাবে আবাদ করছেন কৃষকেরা। গ্রাম ঘুরে পাইকারেরা খেত থেকে সবজি কিনছেন।
চকহলদি গ্রামের কৃষক আলিম উদ্দিন জানান, কয়েক বছর আগেও তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতেন। তবে এখন রবি মৌসুমে পুরো জমিতেই সবজি আবাদ করছেন।
আলিম উদ্দিন বলেন, ‘ধান চাষের চেয়ে সবজি চাষ লাভজনক। এক বছরে মৌসুমভিত্তিক নানা সবজি চাষ করা যায়। এতে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ করতে পারছি।’
মোবাশ্বির আলম বলেন, এবার সবজির ফলন ভালো হয়েছে। তবে শুরুতে কিছুটা বাড়তি দাম পেলেও এখন বাজার দর পড়ে গেছে।
একই এলাকার সবজিচাষি রব্বানী মিয়া বলেন, ‘সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে আমার আয় হয় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। এতে আমাদের ধানের চেয়ে সবজিতে বেশি লাভ হচ্ছে।’
পাশের বাগেরহাট আড়তের স্থানীয় ব্যাপারী আব্দুল জলিল বলেন, প্রতিদিন এই ইউনিয়নের বাগের হাট, চণ্ডীপুর মোড় ও গড়েয়া আড়তে পাইকারিভাবে সবজি বেচাকেনা হয়। বিকেলের পর থেকে ট্রাকে সবজি লোড করা হচ্ছে। রাতে এসব সবজি ট্রাকে করে সরাসরি রাজধানী ঢাকার আড়তে পৌঁছে যাচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলার মধ্যে গড়েয়া ইউনিয়ন কৃষিতে সমৃদ্ধ একটি এলাকা। কয়েক বছর ধরে সবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকেরা। এ কারণে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ গ্রামের কৃষকদের দেখে অন্য কৃষকরাও সমন্বিত কৃষিতে আগ্রহী হবেন—এমনটি আশা এ কর্মকর্তার।