রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের ডরমিটরি থেকে এক চিকিৎসকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় হাসপাতালের শেখ রাসেল ডরমিটরির পঞ্চম তলার একটি কক্ষে তাঁকে নগ্ন ও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিহত চিকিৎসকের নাম মো. আক্তারুজ্জামান। তিনি আগামী ৬ জুলাই একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে মেডিকেল কলেজে এসেছিলেন। আক্তারুজ্জামান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি নীলফামারী জেলায়। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। এখন তিনি এই মেডিকেল কলেজ থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করছেন।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ১১টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজের শেখ রাসেল ডরমিটরি ভবনের পঞ্চম তলার সিক্স-এফ নম্বর কক্ষ থেকে পচা গন্ধ বের হচ্ছিল। এ সময় দরজার নিচ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে ওই চিকিৎসকের নগ্ন মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে।
মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, নিহত আক্তারুজ্জামান পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনে ডিপ্লোমা ইন ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড সায়েন্স বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। রমেক পরীক্ষাকেন্দ্রে ৬ জুলাই ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শেখ রাসেল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডরমিটরির সামনে আক্তারুজ্জামানের স্ত্রী মোছা. কোহিনুর আক্তার জানান, আক্তারুজ্জামান পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তিন দিন আগে রংপুরে আসেন। তাঁর নীলফামারীর গ্রামের বাড়ি থেকে পরীক্ষা দেওয়ার কথা। এর আগে তিনি এই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আটবার অকৃতকার্য হয়েছিলেন। এবার নবমবারের মতো পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর।
কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘উনি (আক্তরুজ্জামান) ঢাকা পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) অফিসার পদে চাকরি করেন। ৬ জুলাই গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উনি কবে ডরমিটরিতে উঠেছেন, তা জানি না। ওনার লিভারে সমস্যা ছিল, প্লাস দুই পায়ে সব সময় ব্যথা ছিল। সেখান থেকে রক্তক্ষরণও হতো। উনি প্রায়ই অসুস্থ থাকেন।’
রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসক আক্তারুজ্জামান পোস্টগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী ছিলেন। সকালে ডরমিটরি থেকে জানতে পারি, আক্তারুজ্জামানের রুম থেকে গন্ধ আর রক্ত আসছে। বিষয়টি পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানাই। এরপর একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দরজার তালা ভেঙে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।’