চারপাশে সবুজ বনে ঘেরা। এর মধ্যে অথই বিলের পানি। বিলের ওপর দিয়ে চলে গেছে আঁকাবাঁকা কাঠের একটি সেতু। টানা বর্ষণে সেতুর ওপর হাঁটু পানি। ডুবে যাওয়া সেতুটি দেখতে নৌকা নিয়ে আসছেন দর্শনার্থীরা। এটি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যানের (আশুরার বিল) শেখ ফজিলাতুন্নেসা সেতু।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বিলের পানি বেড়েছে। গত সোমবার রাতে ডুবে যায় এলাকার জনপ্রিয় এ সেতুটি। তবুও ডুবে যাওয়া দৃষ্টিনন্দন সেতুটি এক নজর দেখতে আগ্রহের কমতি নেই দর্শনার্থীদের। নৌকা নিয়ে আসছেন সেতুটি দেখতে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচলও করছেন। এতে যেকোনো সময় নৌকা ডুবে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আজ বুধবার সকালে বিল পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিল পাড়ের কোল ঘেঁষে নির্মিত দোকান-পাট। পুলিশ ফাঁড়িসহ আঁকা-বাঁকা কাঠের সেতু পানিতে ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া সত্ত্বেও অনেক দর্শনার্থী নৌকায় চড়ে সেতু দেখতে যাচ্ছেন। এক সঙ্গে ১০-১২ জন নিয়ে নৌকায় উঠছেন। সেখানে নেই নৌকার যাত্রীদের ন্যূনতম নিরাপত্তা।
বিলের নৌকার মাঝি মো. আলিম উদ্দিন বলেন, ‘কাঠের সেতুটি পানিতে ডুবে গেছে। লোকজন আসছে নৌকায় চড়ে ডুবে যাওয়া সেতুটি দেখতে। এতে আমাদের বাড়তি আয় হচ্ছে। বর্তমানে বিলে তিনটি নৌকা ভাড়ায় চলাচল করছে।’
দর্শনার্থী শামীম হোসেন বলেন, নৌকার যাত্রীর বেশির ভাগ ভাগই সাঁতার জানে না। এ ছাড়া নৌকার যাত্রীদের জীবন রক্ষাকারী কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা হতে পারে।
বিরামপুর থেকে ঘুরতে আসা কলেজছাত্রী মাইসা জান্নাত বলে, ‘জাতীয় উদ্যানে দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু দেখতে এসেছি। কিন্তু সেতুটি পানিতে ডুবে গেছে তা জানতাম না। অনেকে সেতুটি দেখতে নৌকা ভাড়া করে যাচ্ছে। সেখানে নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আমি যাইনি।’
নবাবগঞ্জ শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘বিলে দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু পানিতে ডুবে গেছে। সেখানে দর্শনার্থীরা নৌকায় ভ্রমণ করছে শুনেছি। বর্তমানে সেতুটিতে পানি থাকায় নৌকা ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ। লাইফ জ্যাকেট ছাড়া কোনো দর্শনার্থী নৌকায় যাতে না উঠে সেই নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিলে নৌকা ডুবে দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থী ডুবে মারা যান।