পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার ওপর এত ভরসা করত, কিন্তু তাদের খোলা মাঠে রেখে ভয়ে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাশ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জেল খাটিয়েছে, গুম করেছে, খুন করেছে, নির্যাতন করেছে, বাড়িতে থাকতে দেয় নাই। বউ-বাচ্চাসহ বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, এই ফ্যাসিস্ট, খুনি হাসিনা প্রশাসনকে অপব্যবহার করে যে কাজগুলো করছে, এই কাজের ফল কী হতে পারে?’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হাসিনার ওপর এত ভরসা করত, কিন্তু তাদের খোলা মাঠে রেখে ভয়ে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি। এখানে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আছে, সেই শিক্ষা আমাদের নিতে হবে। এই একই কাজ যেন আমরা ভবিষ্যতে না করি। যারা ভালো, যারা ভালো কাজ করেছে, কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল না, কোনো ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত ছিল না—তারা যে দলেরই হোক না কেন তাদের সঙ্গে যেন নতুন করে অন্যায় না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন কেউ দুই বছর, তিন বছর, পাঁচ বছর পর ক্ষমতায় আসবে, ১০-২০ বছর পরে ক্ষমতায় আসবে, তাঁরা যদি একই কাজ করে; তাহলে গ্রামের ভাষায় বলি, এক দলের সঙ্গে আরেক দলের কামড়াকামড়ির সারা জীবন চলতে থাকবে। সুস্থ পরিবেশ রাজনৈতিক চর্চা কোনো দিন এস্টাবলিশ হবে না।’
অন্যায়-অত্যাচারকারীদের শাস্তির আওতায় আনা দর উল্লেখ করে সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আর কোনো দোসর যদি বিগত সময়ে অন্যায় করে, থাকে অত্যাচার করে থাকে, কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকে—তাদের আইনগতভাবে যে শাস্তি হওয়া উচিত, সেই শাস্তি যেন হয়। কিন্তু একইভাবে কোনো নির্দোষ মানুষ যেন কোনোভাবে অন্যায়ের শিকার না হয়।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হিন্দু-মুসলমান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একই হোটেলের পাশাপাশি চেয়ারে বসে, একই বাড়িতে একই টেবিলে পাশাপাশি বসে খাওয়াদাওয়া করি, আড্ডা দেই, রাতে এক বিছানায় ঘুমাই। এই ধর্মীয় সম্প্রীতি যেন নষ্ট না হয়। কেউ যেন এটাকে ব্যবহার করে আমাদের মাঝে বিভাজন তৈরি না করতে পারে।’