হোটেল আর অন্যের জমিতে মজুরির কাজ করে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে শাকিল মিয়া। তার এই সাফল্যে খুশি এলাকাবাসী, শিক্ষক ও বাবা-মা। এদিকে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে এসএসসি পাস করলেও উচ্চতর শিক্ষা কীভাবে চালিয়ে যাবেন সে নিয়ে চিন্তিত শাকিল।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কুরুষাফেরুষা গ্রামের দিনমজুর ফারুক হোসেনের ছেলে শাকিল মিয়া। মা সাথী পারভীনের একমাত্র ছেলে। ভিটেবাড়ির এক চিলতে জমিতে চালা ঘরে কোনো মতে বসবাস তাদের। সহায় সম্বলহীন বাবার একার আয়ে সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করে সে। আজ সোমবার এসএসসির প্রকাশিত ফলাফলে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
শাকিলের বাবা ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে নিজের চেষ্টায় আজ যে ফলাফল করেছে তাতে আমি খুশি। আমার কোনো টাকা পয়সা নাই। ছেলে কীভাবে পড়াশোনা করবে!’
মা সাথী পারভীন বলেন, ‘ছেলেটা খেয়ে না খেয়ে আজ ভালো ফলাফল করেছে। আমি খুশি হলেও চোখে অন্ধকার দেখছি। এখন আমার ছেলেটার কী হবে!
ওর জীবনটা সুন্দর দেখে যেতে চাই।’
উপজেলা সদরের বৈশাখী হোটেলে কথা হয় শাকিলের সঙ্গে। সে তার ফলাফলে সন্তুষ্ট হলেও নির্বিকার। এখন কোথায় পড়বেন জানে না সে। শাকিল বলে, ‘কষ্টে এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। এখন কোথায়, কীভাবে ভর্তি হব জানি না। বাবার ক্ষমতা নেই আমাকে পড়ানোর।’
বৈশাখী হোটেলের মালিক আবদুস সামাদ বলেন, ‘শাকিল তিন মাস ধরে আড়াই শ টাকা দৈনিক মজুরিতে ৩ মাস ধরে কাজ করছে। সে খুব পরিশ্রমী। বিনয়ী।’
বালার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শাকিল মেধাবী গরিব ছাত্র। তার পরিবারের অভাব অনটনের কারণে আমরা তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছি। সহযোগিতা পেলে সে অনেক দুর মেতে পারবে।’