হোম > সারা দেশ > রংপুর

তীব্র খরায় রংপুরে ঝরছে আমের গুটি

কেএম হিমেল আহমেদ, বেরোবি

দেশের বেশির ভাগ এলাকায় চলছে দাবদাহ। এই পরিস্থিতিতে রংপুরের মিঠাপুকুরের পদাগঞ্জে প্রচণ্ড খরায় ঝরছে আমের মুকুল। ওষুধ স্প্রে করে এবং পানি দিয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। এমন অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় আছেন আমচাষিরা। একমাত্র বৃষ্টি ছাড়া আমের গুটি ঝরা বন্ধের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন কৃষিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

সম্প্রতি রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম স্বীকৃতি পেয়েছে জিআই পণ্য হিসেবে। রংপুরে বাণিজ্যিকভাবে অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে আমের বাজারে। গত কয়েক বছর ধরে প্রতি বছর রংপুরে কেনাবেচা হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকার আম। আর এসব আম উত্তরবঙ্গ থেকে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। 

কৃষকেরা জানান, চলতি বছরে আমের মুকুল আসার সময় হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় কালচে হয়ে বেশির ভাগ মুকুলই নষ্ট হয়েছে। অবশিষ্ট মুকুল থেকে যা আমের গুটি হয়েছে, তা চলতি বৈশাখ মাসে টানা খরা, দাবদাহ ও পোকার আক্রমণে ঝরে পড়ছে। সেচ ও স্প্রে দিয়েও কাজ হচ্ছে না। 

মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ এলাকার আমবাগান ঘুরে আমের গুটি কম থাকার ও ঝরে পড়ার চিত্র চোখে পড়ে। এ ছাড়া রংপুরের অন্যান্য উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর আমের গুটি কম এসেছে এবং খরায় আমের গোড়া শুকিয়ে গুটি ঝরে পড়ছে। 

মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ বাজারসংলগ্ন রুস্তমাবাদ গ্রামের আমচাষি নূরুজ্জামান বলেন, ‘এ বছর বাগান লিজ নেওয়াসহ ১০ বিঘা জমিতে আমের বাগান করছি। এখন খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে। মৌল (মুকুল) আসার সময় বৃষ্টিতে মৌল কালো হয়য়া গেল, গুটিও হইছে কম, সেগুলো গরমে গোড়া শুকায় পড়ে যাচ্ছে। স্প্রে করিয়েও কাজ হচ্ছে না। স্থানীয় বিএসকে (কৃষি পরামর্শক) দেখায়াও কোনো লাভ হয় নাই।’

আবু সাঈদ নামের অপর এক আমচাষি বলেন, ‘১২ একর জমিতে আমের বাগান করেছি। এত দিন আমের ভরে ডাল হালিয়া পড়ার কথা। এ বছর আম বেশি ধরে নাই। বলতে পারছি না এবার কী যে কপালে আছে।’ 

আমচাষি রায়হান আলী জানান, আমের প্রচুর মৌল আসছিল। শুরুতে বৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় তখন আমের ক্ষতি হয়। এখন বাগানে আম কম, যা আছে সেটাও যদি আটকানো যাইত, তবু কিছুটা লাভ করা যাইত। এই সময়ে বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন। বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমের আকার বেশ ছোট হবে। একই আমের সঙ্গে উৎপাদনও কমবে। 

এদিকে তীব্র খরায় আমের গুটি রক্ষায় প্রতিদিন গাছে পানি স্প্রে করার মাধ্যমে আমগাছ ধুয়ে দেওয়াসহ পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। 

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মেহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমের মুকুল আসার সময় পরপর কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় মুকুলে সমস্যা হয়েছিল। এখন সারা দেশেই দাবদাহ চলতেছে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে সেচ দিতে হবে। আমরা দেখেছি, যেসব চাষি নিয়মিত সেচ দিচ্ছেন, তাঁদের আমের গুটি পড়ার সমস্যা হচ্ছে না। যাঁরা এক দিন সেচ দিচ্ছেন আর এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ দিচ্ছেন না, তাঁদের এই সমস্যা হচ্ছে।’ 

আমে পোকা রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমের বাগানে পোকা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। সঠিক ওষুধ ও পানির অনুপাত ঠিক রাখলে পোকা দমন করা সম্ভব। মোট কথা, আমচাষিদের এ সময় বাড়তি যত্ন নিতে হবে। 

উল্লেখ্য, রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছর রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষাবাদ করা হয়েছে ১৯০৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার মেট্রিক টন।

ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির মহোৎসব

গাইবান্ধায় দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে গিয়ে প্রাণ গেল ইউপি সদস্যের

পঞ্চগড়ের মানুষ চাইলে সারজিস কিংবা কোনো তরুণ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন

মিজানুর রহমান আজহারী লালমনিরহাট যাচ্ছেন শনিবার

শুধু একটি ভোটের জন্য এই গণ-অভ্যুত্থান হয়নি: নুরুল হক নুর

দিনাজপুরের সাবেক এমপি রেজিনা ইসলাম মারা গেছেন

গোবিন্দগঞ্জে চাঁদার দাবিতে মৎস্য ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

এবার গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে গেল দিনাজপুরের হাবিপ্রবি

বিএনপি নেতার পাহারায় সরকারি জমিতে অবৈধভাবে পাকাঘর নির্মাণের অভিযোগ

সীমান্তে আর কোনো লাশ দেখতে চাই না: সারজিস

সেকশন