সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
বাগানে সারি সারি কমলার গাছ। থোকায় থোকায় ঝুলছে ফল। কমলার রঙে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে বাগান দেখতে আসা মানুষের। বাড়ি ফেরার পথে অনেকে এসব মিষ্টি কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এই দৃশ্য গতকাল বুধবার দেখা গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ বঠিনা গ্রামের উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীনের কমলার বাগানে।
জেলার কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, ধান, গম, সরিষার পাশাপাশি বিভিন্ন ফল-ফসল চাষের জন্য ঠাকুরগাঁও জেলার মাটি উপযোগী। এ কারণে এই অঞ্চলে মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান তৈরিতে ঝুঁকছেন অনেক চাষি। জেলায় ছোট–বড় ৬০টি কমলার বাগান আছে।
জেলার কমলার চাষিদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন পীরগঞ্জ উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের চাষি আবু জাহিদ ইবনুল ইরাম জুয়েল। তিনি ছয় বিঘা জমিতে কমলার বাগান করে সফল হয়েছেন। তিনি রঙিন মাল্টা ও দার্জিলিং জাতের কমলার চাষ করেছেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার দক্ষিণ বঠিনা গ্রামের জয়নাল আবেদিন শখের বসে ছয় বিঘা জমিতে কমলা চাষ করেও ভালো ফলন পেয়েছেন। তিনি চায়না ও দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান করেছেন। বাগানের অধিকাংশ গাছ থেকে ১০০–১৫০ কেজি ফলন পাচ্ছেন বলে জানান এই দুই উদ্যোক্তা।
জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ বঠিনা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ভারতের দার্জিলিং ঘুরতে গেলে অনেকের অন্যতম আকর্ষণ থাকে কমলা বাগানের দৃশ্য ঘুরে দেখার। সেই দার্জিলিং ও চায়না জাতের কমলার চাষ শুরু করি চার বছর আগে। বর্তমানে দুই একরের বেশি জমিতে এই বাগান করেছি। আমার বাগানে এখন দার্জিলিং জাতের কমলার গাছ আছে ১৭০টি, চায়না ১৩০টি ও মালটা রয়েছে ১৩৫টি। কমলা বাগান দেখতে এসে দর্শনার্থীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এসব মিষ্টি কমলা।’
কমলার ক্রেতা দক্ষিণ বঠিনা গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়া হোসেন জানান, তিনি পরিবারের জন্য এখান থেকে কমলা নিতে এসেছেন। কমলাগুলোর আকার ও রং বেশ আকর্ষণীয়। বাজারের কমলার চেয়ে এর স্বাদ ও রস বেশি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় ছোট-বড় ৬০টি কমলার বাগান রয়েছে। কমলা চাষে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। কৃষকেরা যদি এভাবে বাগান করতে এগিয়ে আসেন তাহলে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে। লেবু জাতীয় এই ফসল বিদেশ থেকে আনতে হবে না।’