হোম > সারা দেশ > রংপুর

‘মাঝেমধ্যে বয়লার মুরগি খাচনো, এখন মোকত সেটাও চইরবার নায়’

আব্দুর রহিম পায়েল (রংপুর) গঙ্গাচড়া

‘হামাগের মোকত (মুখে) মনে হয় আর গোশত (মাংস) চইরবার নায়। গরু–খাসির গোশত কত দিন থাকি যে মোকত চরে না তা নিজেও জানি না। কোনো রকমে মাঝে মাঝে বয়লার মুরগির গোশত কিনি খাচনো। একন তো আর সেটাও কিনি খাওয়া হবার নায়। হামার সরকার এমন উন্নয়ন করিল যে দেশোত সবকিছুর দাম আকাশ ছোঁয়ার মতো হয়া গেল।’

আজ শনিবার সকালে কোলকোন্দ ইউনিয়ন থেকে গঙ্গাচড়া ভেতর বাজারে বয়লার মুরগির মাংস কিনতে এসে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে এসব কথা বলছিলেন আমিনুর রহমান (৪৫)। তিনি পেশায় রিকশাচালক। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে চার সদস্যের সংসার। সারা দিন রিকশা চালিয়ে যা আয় করেন তা দিয়ে এখন সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর।

এ সময় কথা হয় মুদি দোকানে চাল কিনতে আসা রোজিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর স্বামী রংপুরের একটি পোশাকের দোকানে চাকরি করেন। মাসে বেতন পান ১২ হাজার টাকা। গত মাসের বেতন এখনো পাননি। ফলে মাসের বাজার ও ছেলে মেয়ের স্কুলের বেতন দিতে পারেননি। আজ বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীর কাছে ২০০ টাকা ধার নিয়ে বাজারে এসেছেন চাল কিনতে। কয়েক দিনের তুলনায় আজকে মোটা চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশি। তাই দুই কেজি চাল আর বাকি টাকা দিয়ে কিছু সবজি কিনে বাড়ি ফিরছেন।

এ সময় রোজিনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনই যদি জিনিসপত্রের এ রকম দাম বাড়ে, কিছুদিন পর রমজান মাস আসতেছে তাহলে রমজানে কী অবস্থা হবে ভাবা যায়! আমাদের দেশে তো ধর্মীয় উৎসব লাগলেই জিনিসপত্রের দাম হুটহাট করে বাড়ায় দেয় সরকার। সরকার যদি আমাদের মতো গরিব মানুষের কথা এখন থেকে চিন্তা না করে। সবকিছুর দাম যদি এভাবে বাড়ায় তাহলে আমাদের তো মনে হয় বাচ্চাদের নিয়ে না খেয়ে মরা লাগবে।’

আমিনুর রহমান ও রোজিনা বেগমের মতো বাজারে আসা ১৫ থেকে ২০ জনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের সবার একটাই ক্ষোভ—জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি। তাঁরা বলছেন, যেভাবে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে—সে তুলনায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের আয় বাড়েনি। বাজারে গেলেই হিসাব মিলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ওপর সামনে রমজান।

আজ উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ২৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০ টাকা, খাসির মাংস কেজিপ্রতি ৯০০ টাকা, গরু প্রতিকেজি ৭৫০ টাকা, পাঙাশ ২১০ টাকা, কই ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২১০ টাকা, রুই মাছ ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। আলু প্রতিকেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, বেগুন ৫৫ টাকা, করলা ৭০ টাকা, শিম ৫৫ টাকা, শসা ৩০, গাজর ৩৫, টমেটো ৩৫, মিষ্টি কুমড়া ৩৫, ঢ্যাঁড়স ৭০, কচুর লতি ৬০, চিচিঙ্গা ৫৫ এবং মরিচ ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কথা হয় গঙ্গাচড়া বাজারের ব্রয়লার মুরগি ব্যবসায়ী মোরসালিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজার চড়া। আগে আমরা মুরগি কিনতাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে, সেই মুরগি এখন কিনতে হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকায়। দাম বাড়ায় ক্রেতা কমেছে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫ কেজি ব্রয়লার বিক্রি করবার পাই নাই, কাস্টমার নাই, তাই বসি বসি মোবাইলে গেম খেলাইচোল।’

আর এক ব্যবসায়ীকে দেখা যায় ক্রেতা না থাকায় দোকানের চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এভাবে বাজার চড়া থাকলে বিক্রি না থাকলে, দোকান গুটিয়ে বাড়ি যাওয়া লাগবে।

মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার, আটক ১

বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়ম, কলম ভেঙে ফেলার নির্দেশ

সৈয়দপুরে তৈজসপত্র তৈরি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড

কিশোরের হাতে মোটরসাইকেল, প্রাণ গেল ট্রাকের ধাক্কায়

আবর্জনার স্তূপের নিচে মিলল মুখে কাপড় বাঁধা যুবকের মরদেহ

ডেপুটি স্পিকার ‘ধর্মবাবা’ তাই এলজিইডি অফিস তাঁর নিয়ন্ত্রণে

ঈদের আগে খোঁড়াখুঁড়ি, কেনাবেচায় ভোগান্তি

আগুনে ঘর পুড়ে যাওয়া দেখে অজ্ঞান, হাসপাতালে ভর্তি

স্ত্রীদের নিয়ে ছেলেরা পেটালেন বৃদ্ধ মাকে, ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ

রংপুরে পুলিশের উপকমিশনারের পক্ষে চাঁদা দাবি, অমিত বণিক দুই দিনের রিমান্ডে