গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা জেলা কারাগারে এক নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে প্রধান কারারক্ষীসহ এক মহিলা কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর কারা উপমহাপরিদর্শক মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে তাদের পৃথক এ অফিস আদেশ জারি করা হয়।
বদলিকৃতরা হলেন জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম ও কারারক্ষী সাবানা বেগম।
আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে ও সাবানা বেগমকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে বদলি করা হয়েছে। বদলিকৃত কারাগারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ‘কারারক্ষী ও নারী কয়েদির অনৈতিক সম্পর্ক, দেখে ফেলায় নারী হাজতিকে মারধরের অভিযোগ’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশিত হয়।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার নারী কয়েদি মোর্শেদা খাতুন সীমা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। তিনি গোবিন্দগঞ্জ থানার মাদক মামলার আসামি। সীমা প্রায় পাঁচ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দী আছেন।
গত ১৬ এপ্রিল কারাগারে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন সীমার মা করিমন নেছা।
বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন সীমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। ঘটনা জানাজানির ভয়ে তারা কারাগারের ভেতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।
হাজতি সীমা এসব ঘটনা জানিয়ে জেল সুপারের কাছে বিচার দেবেন জানালে কারারক্ষী আশরাফুল তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন।
একপর্যায়ে ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে মহিলা কয়েদি মেঘলা, কারারক্ষী সাবান বেগমসহ কয়েকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন করে।
গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাবেদ মেহেদী তাদের বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম, নারী কারারক্ষী তাহমিনা ও শাবানাসহ তিনজনকে রংপুর কারাগারে বদলি করা হয়েছে।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, ‘গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন থেকে ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’