সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
‘আমি ফুল কদম ডালে ফুটেছি বর্ষাকালে’ গীতি কবির এমন কথা এখন আর মিলছে না। ষড়্ঋতুর দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে এখন আর সেই ঋতুর বৈচিত্র্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। অহরহই প্রকৃতিতে ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটে চলেছে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত—এ ছয় ঋতুর নামও যেন অনেকের কাছ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
বর্ষার দূত কদম ফুল আষাঢ় মাসে দেখা যাওয়ার কথা থাকলেও বৈশাখ মাসেই এখন গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সেই কদম ফুল। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চকহলদী গ্রামসহ বেশ কিছু এলাকার গাছ ছেয়ে থাকা কদম ফুলের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে শিশুরা তাদের খেলার অনুষঙ্গ হিসেবে এই ফুলকে বেছে নিয়েছে। গাছের এ ফুল পেড়ে খেলায় মেতে উঠছে শিশু-কিশোরের দল।
চকহলদী গ্রামের আনিসুর রহমান বলেন, এই খরা মৌসুমে কদম ফুল ফোটে—এমনটা এলাকাবাসী কখনো দেখেনি। স্কুলশিক্ষক সুজন আলী বলেন, এত পরিমাণ গাছে কদম ফুল ফুটছে, তা দেখে মনে হচ্ছে এখন যেন আষাঢ় মাস।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। আর আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে উদ্ভিদের পরিবর্তনের কারণে অসময়ে কদম ফুল ফুটছে।
ঠাকুরগাঁও পরিবেশবাদী সংগঠন সৃজনের সভাপতি আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, ‘বর্ষার বন্দনায় আমাদের গানে কবিতায় ও শিল্প-সাহিত্যে কদম ফুল স্থান পেয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে তাপমাত্রারও হয়েছে পরিবর্তন।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈশাখে কদম ফুল ফুটলেও বর্ষার কদমের চেয়ে ছোট আর ক্ষণস্থায়ী এটি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কিছুটা কারণ আছে বলেও মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা।