কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক আব্দুল হাইয়ের দিকে তেড়ে যাওয়ার ঘটনার মামলায় মূল অভিযুক্ত সেই বিএনপি নেতা ও অভিভাবক মাসুদ রানা আগাম জামিন পেয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের ডিভিশন বেঞ্চ মাসুদ রানার ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন আদেশ দেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি এজাহার নামীয় তিন অভিভাবক ফরিদুজ্জামান মণ্ডল রুমন, মো. আমিনুল ইসলাম লিটন ও মো. আলতাফুর রহমান বিদ্যুতের চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। মাসুদ রানার জামিন আদেশের পর এই মামলায় এজাহার নামীয় সকল আসামি জামিন পেলেন।
আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মক্কেলের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে মহামান্য হাইকোর্ট মাসুদ রানাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনের আদেশ দিয়েছেন। ছয় সপ্তাহ পর তিনি অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন।’ আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।
গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে সন্তানের ভর্তি বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন দিতে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে যান কয়েকজন অভিভাবক। এ সময় অফিস কক্ষে থাকা স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুল হাইয়ের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁর ওপর চড়াও হন বিএনপি নেতা ও ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মাসুদ রানা। শিক্ষকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের এ ঘটনার একটি সিসি টিভি ফুটেজ প্রকাশ হয়।
সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ভুক্তভোগী শিক্ষকের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁর ওপর তেড়ে যাচ্ছেন। তাঁর অমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে শিক্ষক আব্দুল হাই নিজেকে সুরক্ষায় সরে যাচ্ছেন। পরে উপস্থিত অন্য শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বিএনপি নেতা মাসুদ রানাকে নিবৃত্ত করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে ওই দিন বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষক এ বিষয়ে আইনি নিরাপত্তা চেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ওই শিক্ষকের এজাহারের প্রেক্ষিতে মামলা হয়।
মামলায় মাসুদ রানার বিরুদ্ধে শিক্ষককে ধাক্কা ও কিল-ঘুষি দেওয়ার অভিযোগ আনা হলেও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।