গাইবান্ধা: যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি দারা গৃহবধূ লিপা বেগম নামে এক গৃহবধূর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এসব দাবি জানান নিহত গৃহবধূর অসহায় দরিদ্র পিতা রাজু মিয়া ও মা লাভলী বেগম।
এই হত্যাকে-কে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য সদর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। এমনকি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগেই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর চূড়ান্ত রিপোর্ট পুলিশ দাখিল করেছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা সহ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি ও অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করার জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, পলাশবাড়ি উপজেলার তালুক ঘোড়াবান্দা গ্রামের দরিদ্র কৃষক রাজু মিয়ার মেয়ে লিপা বেগম (২০) এর সঙ্গে সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের ছোট ভবানীপুর গ্রামের মোসলেমের ছেলে ইজিবাইক চালক হাসান আলীর তিন বছর আগে বিয়ে হয়। তাঁদের ৮ মাস বয়সের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। এরপরও প্রায়ই যৌতুকের দাবিতে অহেতুক নানা দোষ এনে হাসান আলী ও তাঁর বাবা-মা লিপাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে গত রোববার (২৭ জুন) তাঁদেরকে মোবাইল ফোনে লিপার আত্মহত্যার খবর দেওয়া হয়।
পরে তাঁরা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর লাশ দেখতে পান। কিন্তু তাঁদের জামাই হাসার আলী ও তাঁর পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ সময় লিপার শরীরের বিভিন্ন স্থানে তাঁরা জখমের চিহ্ন দেখতে পান।
এরপর সদর থানার এসআই ইসলাম মল্লিক ঘটনাস্থলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠান এবং তাঁদেরকে থানায় ডাকেন। থানায় যাওয়ার পর এসআই ইসলাম মল্লিক তাঁদের ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি মামলার কাগজে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা না জেনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে পুলিশ হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে মনগড়া একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা।