আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর
কথায় আছে-‘মাঘের শীতে বাঘেও কাঁপে’। প্রচলিত সেই বাক্য যেন বাস্তব হয়ে দেখা দিল উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। মাঘের শুরু থেকেই শীতের দাপট তীব্র হতে শুরু করেছে এই অঞ্চলে। বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা, কনকনে ঠান্ডায় নাকাল জনজীবন। আজ বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত কয়েক দিন ধরেই উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীতের দাপট। শীতের তীব্রতা থেকে রেহাই পেতে গ্রামের মানুষেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে সন্ধ্যার পর থেকে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে। নিতান্তই প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষের দেখা মিলছে পথে-ঘাটে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা।
অন্যদিকে, আলু, রসুন ও বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকেরা। গত ৩-৪ দিনে সূর্যের দেখা মিলেছে খুব সামান্যই।
বিরলের আলু চাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দুঃখের কথা কি কহবো (বলব) ভাই, আজকে খুব শীত। বৃষ্টির মতো কুয়াশা পইড়ছে। শীতের কারণে মাঠে থাকা যায় না, আলুর গাছও কুঁকড়ে যাচ্ছে, পচন ও ধরবা পারে।’
ইজিবাইকচালক সাইফুল বলেন, ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে সকাল সকাল কোনো মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। রাস্তায় লোকজন থাকেই না বলা চলে। ঠান্ডায় কষ্ট করে বের হলেও আয় রোজগার একদমই কম। সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
জেলা তথ্য অফিসের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার। এ সময় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি, রংপুরে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টায় দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বুধবার একদিনেই দিনের তাপমাত্রা কমেছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
তিনি আরও বলেন, ‘বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে জলীয় বাষ্প বেশি থাকার কারণে সূর্যের আলো ঠিকমতো পড়ছে না। সে কারণে তাপমাত্রা কমছে। তবে আগামী রোববার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে।’