গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পৈতৃক জমি ফেরত ও তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন সাঁওতালেরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন তাঁরা।
এদিন উপজেলার সাহেবগঞ্জের সাঁওতাল পল্লি থেকে সাঁওতালরা তির-ধনুকসহ মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন। পরে তাঁরা গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সাঁওতালদের বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার শুরু আজও হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সেই সঙ্গে সাঁওতালদের বাপ-দাদার পৈতৃক সম্পত্তি ফেরত দেওয়ারও দাবি জানান বক্তারা। পরে এসব দাবি নিয়ে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে পৃথক স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু, মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা, কুশলাশীষ চক্রবর্তী ও ফারুক কবীর, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু, ব্রিটিশ সরেন, ময়নুল ইসলাম, সাঁওতাল হত্যা মামলার বাদী থমাস হেমব্রম, মনির হোসেন সুইট, হাসান মোর্শেদ দীপন প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর তৎকালীন এমপি আবুল কালাম আজাদ, মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের এমডি, জিএম তাদের সন্ত্রাসীরা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশসহ সাঁওতালদের উচ্ছেদ করতে গেলে দফায় দফায় সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ৩০ জন সাঁওতাল আহত হন। তাঁদের মধ্যে তিন সাঁওতাল মঙ্গল মারডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম মারা যান। অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায় সাঁওতালদের ঘরবাড়ি।
পরে জয়পুরপাড়ায় শিশুদের জন্য একটি বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কতিপয় বাঙালি ভূমিদস্যু বিদ্যালয়ের মাঠটি আবারও দখলে নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছে। ফলে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সাঁওতাল শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত ও সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। স্মারকলিপিতে নিরীহ সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মানুষের নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণ বসবাসের দাবি জানানো হয়।