কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ২ নম্বর হারাগাছ ইউনিয়নের পূর্ব নাজিরদহ গ্রামের ১৪০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে গেছে। ঈদের পরদিন ১৮ জুন রাতে প্রবল বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে তিস্তার শাখা মানাস নদের ওপরের বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নদের দুই পারের কয়েক শ পরিবার।
পূর্ব নাজিরদহ গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী ও রুমেল মিয়া জানান, গত সপ্তাহে টানা কয়েক দিন রাতভর বৃষ্টির ফলে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সাঁকোটি ভেঙে যায়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবী লোকজন স্কুলে ও কর্মস্থলে যেতে পারছে না।
তাঁরা জানান, প্রায় দুই দশক আগে দুই পারের মানুষ নৌকায় পারাপার করত। লোকজনের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় তখনকার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করে দেন। সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরলে তিস্তার শাখা মানাস নদে একটি স্বল্প প্রস্থের সেতু নির্মাণের দাবি করে এলাকাবাসীর। এ পরিস্থিতিতে গত বছর উপজেলা পরিষদ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটির পাশেই একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ শুরু করা হয়। কিন্তু কাঠের সাঁকোটির দুই পারে প্রায় ৬০ ফুট নির্মাণকাজ অসমাপ্ত রয়েছে। সাঁকোটি নদের মাঝখানে পড়ে থাকার ফলে পারাপারে কোনো কাজে আসছে না। নতুন সাঁকোটির অসমাপ্ত কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।
ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা আব্দুল মমিন বলেন, নদের উত্তর পারে তিন শতাধিক পরিবার বসবাস করে। এক সপ্তাহ ধরে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ভেঙে পড়া সাঁকো দিয়ে পারাপার করছে। সংস্কারের উদ্যোগ তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজও নিতে আসে নেই।
কৃষক আজিজ বলেন, স্থানীয় কৃষকের জমি রয়েছে উভয় পাশে। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় ফসল আনতে নদ পার হতে কষ্ট করতে হয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে লোকজন উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে হচ্ছে।
হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ বলেন, বাঁশের সাঁকোটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছিল। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। ভেঙে পড়া সাঁকোটির পাশে নির্মিত কাঠের সাঁকোটির অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।
যোগাযোগ করা হলে কাউনিয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমী বলেন, তিস্তার শাখা মানাস নদের ওপর কাঠের অসমাপ্ত সাঁকোটির নির্মাণকাজের একটি প্রকল্প পাস হয়েছে, শিগগিরই তা নির্মাণ করা হবে।