কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের কবর জিয়ারত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় ফেলানীর মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে তাঁদের মেয়ে হত্যার বিচারের আশ্বাস দেন তিনি।
আজ শুক্রবার বিকেলে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা গ্রামে ফেলানীর বাড়িতে যান জামায়াতের আমির। এরপর ফেলানীর কবর জিয়ারত করে তার বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।
পরে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম নুরু, মা জাহানারা বেগম ও তিন ভাই জাহান উদ্দিন, আরফান আলী ও আক্কাস আলীর সঙ্গে মতবিনিময় করে সবাইকে নতুন জামা-কাপড় উপহারসহ তাঁদের আর্থিক সহায়তা দেন।
এ সময় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এ হত্যার সুবিচার হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে তৎপর ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফেলানী হত্যার বিচারকে ত্বরান্বিত করবে, এটা আমাদের দাবি।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সদস্যরা ফেলানীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল। ফেলানী হত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। এটি সারা বিশ্বে একটি আলোচিত ঘটনা। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে।’ আন্তর্জাতিক আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ফেলানীর মতো আর যেন কেউ সীমান্তে হত্যার শিকার না হয়, সে জন্য আমাদের সবার সজাগ থাকতে হবে।’
এর আগে আজ দুপুরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের মাঠে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন ডা. শফিকুর রহমান।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম নুরু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি এখনো আমাদের মেয়ে ফেলানীর মুখচ্ছবি ভুলতে পারছি না। আমার চোখের সামনেই বিএসএফের গুলিতে ফেলানীর মৃত্যু হয়। ‘ন্যায়বিচার পেতে আমি ভারতে বহুবার গিয়েছিলাম। কিন্তু গত ১৪ বছরেও সেই ন্যায়বিচার পাইনি। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচারের দাবি জানাই।’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ফেলানী খাতুন (১৪) নিহত হয়। তার দেহ সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে ছিল। এ ঘটনায় গণমাধ্যমসহ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তবে ফেলানীর হত্যা মামলা এখনো ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। এটি এখনো বিচারিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তার পরিবার এখনো ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে।