খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
উত্তরের জেলাগুলোতে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র ঠান্ডায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষক-কিষানিরা। কীটনাশক স্প্রে করেও মিলছে না সুফল। তবে কৃষি বিভাগ বলছে এটি আবহাওয়াজনিত বিষয়। দুশ্চিন্তার কিছু নয়। এ সময় বাড়তি যত্ন করলে শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলে রসুনের এ সমস্যা কেটে যাবে।
আজ সোমবার সকালে উপজেলার গোয়ালডিহি, হাসিমপুর, কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রসুনের চাষ হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে জেঁকে বসা শীত ও ঘন কুয়াশায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এটি টিপবার্ন রোগ বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এদিকে গত বছরগুলোতে রসুনের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হলেও এবার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরে ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর।
দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এ বছর খরচ হয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৪৫-৬০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজারমূল্য ৭-৮ হাজার টাকা। তাই খরচ বেশি হওয়ার পরও ভালো লাভের আশা করছেন তাঁরা। তবে গাছের পাতার রং পরিবর্তন দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।
বালাপাড়া গ্রামের কৃষক জাকারিয়া ইসলাম বলেন, এমনিতেই চাষাবাদে খরচ বেশি। তার ওপর এ অবস্থা চিন্তায় রেখেছে। কৃষি বিভাগ তো বলছে যে আবহাওয়ার কারণে এমন হচ্ছে, আতঙ্কের কিছু নাই।
খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব সময় খেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি কৃষকেরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক বিষয়। এবার শীত বেশি হওয়ায় টিপবার্ন রোগটা বেড়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে এই অবস্থার উন্নতি হবে। কৃষকদের সচেতনতার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাই আতঙ্কিত না হয়ে যেকোনো প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’