এক দশকেরও বেশি সময় পর কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে হিপজয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের (রিপ্লেসমেন্ট হেমি আর্থোপ্লাস্টি) সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। গতকাল সোমবার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. গোলাম ফারুক মানিক এই অস্ত্রোপচার করেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শাহীনুর রহমান সরদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অস্ত্রোপচার হওয়া রোগীর নাম সুফিয়া বেগম (৪০)। তিনি উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের বছিয়তের স্ত্রী। অপারেশনের পর তিনি বর্তমানে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারে রয়েছেন।
সুফিয়া বেগম জানান, ঈদের আগে পড়ে গিয়ে তার বাঁ পায়ের হাড় ভেঙে যায়। তিনি হাঁটতে পারতেন না। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি করাতে রাজি হন।
সুফিয়া বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের টাকা নাই। হাসপাতালের ডাক্তার বিনা টাকায় করি দিছে। কোনোমতে জিনিসপত্র (সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্ট) কেনার টাকা জোগাড় করছি।’
অপারেশনকারী চিকিৎসক মো. গোলাম ফারুক মানিক বলেন, ‘অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। হাসপাতালে নানা সংকটেও আমরা এই অস্ত্রোপচারে সফল হয়েছি। সরকারি এই হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।’
হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টে যে বাইপোলার হিপ পোস্টেসিস নামক ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে তা কুড়িগ্রামে সরবরাহ নেই। জেলার বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে। রোগী শুধু এই খরচ বহন করেছেন। যোগ করেন ডা. মানিক।
অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নানা সীমাবদ্ধতা ও দক্ষ জনবলের অভাবের কথা তুলে ধরে এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে দক্ষ সহকারী নেই। ওটিতে পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। আবার অস্ত্রোপচারের পরবর্তী দেখভালের জন্য দক্ষ জনবল নেই। নানা সীমাবদ্ধতা নিয়ে অপারেশন করতে হয়েছে।’ তিন সপ্তাহের মধ্যে সুফিয়া বেগম স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এই চিকিৎসক।
আরএমও ডা. শাহীনুর রহমান সরদার বলেন, ‘এ ধরনের অস্ত্রোপচার সাধারণত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালে হয়ে থাকে। এক দশক পর এখানে এই অস্ত্রোপচার হলো। আমরা আমাদের সংকটগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। দক্ষ জনবল সংকট ও নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমাদের চিকিৎসক এই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।’