ভরা শীত মৌসুমে কুড়িগ্রামে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং চলছে। তিন দিন ধরে দিনের বেলায় এক-দেড় ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে লোডশেডিং হচ্ছে চার থেকে ছয় ঘণ্টা। এতে বিপাকে পড়েছেন সেচের ওপর নির্ভরশীল বোরোচাষিরা। এমন চলতে থাকলে বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তাঁদের।
কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ মোড়ের একটি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে ব্যবসা গুটিয়ে পথে বসতে হবে। বিদ্যুৎ না থাকলে ওয়ার্কশপে কোনো কাজ হয় না। কর্মচারীদের অলস বসে থাকতে হয়। সারা দিনে যে কাজ হচ্ছে, তাতে কর্মচারীদের হাজিরার টাকা জোগান দিতে পারছি না।’
পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রাজারহাট উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের বাসিন্দা রোস্তম মিয়া বলেন, ‘বিদ্যুৎ থাকার চেয়ে না থাকার পরিমাণ বেশি। যেভাবে বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে তাতে কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে করা যাচ্ছে না। রাতেও ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এমন চলতে থাকলে বোরোর আবাদ ব্যাহত হবে।’
কুড়িগ্রামে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পাশাপাশি নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। তবে দুই প্রতিষ্ঠানেই বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে।
কুড়িগ্রাম আরইবির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাবুদ্দীন মাহমুদ বলেন, তিন দিন ধরে গড়ে লোডশেডিং হচ্ছে ফিডারপ্রতি চার থেকে ছয় ঘণ্টা। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। চাহিদা ৩৭ মেগাওয়াট, কিন্তু পাচ্ছি ২৭ মেগাওয়াট।
নেসকোর কুড়িগ্রাম কার্যালয় থেকে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম শহরে নেসকোর আওতাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহ অঞ্চলকে আটটি ফিডারে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ফিডারে বিদ্যুতের চাহিদা বর্তমানে এক মেগাওয়াট। এই চাহিদার বিপরীতে তিন দিন ধরে নেসকো তিন থেকে পাঁচ মেগাওয়াট বরাদ্দ পাচ্ছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে।
নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আলিমুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘একেক সময় একেক রকম বরাদ্দ পাচ্ছি। যখন যেমন বরাদ্দ পাচ্ছি সেভাবেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি।’
কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে জানতে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে আজ সকাল ৭টা ৫ মিনিট পর্যন্ত বরাদ্দ স্বাভাবিক ছিল। এরপর আবার ঘাটতি শুরু হয়। ফলে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ পরিস্থিত স্বাভাবিক হবে বলা মুশকিল।’