ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
চলমান দীর্ঘ খরার কবলে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রোপা আমন চাষিরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের মাঝে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। বিকল্প পদ্ধতিতে পানি দিলেও কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ। চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূরক সেচ দিয়ে রোপা আমনের খেতে পানি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। অপরদিকে, সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে কৃষকদের জমিতে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ সেচ পদ্ধতিতে জমিতে পানি দেওয়ায় একদিকে খরচ কমছে, অন্যদিকে কৃষকদের উৎপাদন বাড়ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভুল্লি বাঁধ, টাংগন বাঁধ ও বুড়ি বাঁধ সেচপ্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে এবার আমন চাষ করা হচ্ছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সম্পূরক সেচ দিয়ে এটি সর্বোচ্চ চাষাবাদ। কারণ এ প্রকল্পের মাধ্যমে নামমাত্র খরচে পানি পাচ্ছেন কৃষকেরা। এতে ২৫ হাজার কৃষকের সেচ বাবদ প্রায় ৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
সেচ সুবিধা পাওয়া সদর উপজেলার ভূল্লী এলাকার কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ চালিত সেচপাম্প ও ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে একরপ্রতি আমন ধান চাষে সেচ খরচ কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পড়ছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলের পানি নিয়ে আবাদ করতে ওই পরিমাণ জমিতে খরচ হয় মাত্র ১২০ টাকা। আবার পানিও ইচ্ছেমতো নেওয়া যায়। ফলে ফলন বেশি হয়। ধানখেত ও ক্যানেলে মাছ চাষও করা যায়।’
একই এলাকার আবুল খায়ের বলেন, ‘বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমার দুই একর জমির মাটি ফেটে যাচ্ছিল। কিন্তু ক্যানেল সেচের পানিতে মাটি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, খরা প্রবণ এ জেলায় সম্পূরক সেচের মাধ্যমে কৃষকদের সেচ দিলে পানি সাশ্রয় ও ধানের ফলনও ভালো হচ্ছে। ক্যানেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত মেশিনারিজ যন্ত্র ছাড়াই জমিতে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সম্পূরক সেচ প্রকল্পের অধীনে পুরোনো ও ক্ষতিগ্রস্ত সেচ নালা সংস্কার ও পুনর্বাসনের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজ শেষ হলে ১০ হাজার হেক্টর থেকে ১৩ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।