কুড়িগ্রামের উলিপুরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য না পেয়ে এক ডিলারকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা। আজ বুধবার বিকেলে উপজেলার কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের মিনাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে তিনি মুক্তি পান।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের জন্য ৪ হাজার ২০০ টিসিবির কার্ড বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ ৬০০ কার্ড। ১ নম্বর ওয়ার্ডের টিসিবির পণ্য বুধবার দুপুরে মিনাবাজার এলাকায় ডিলারের মাধ্যমে দেওয়ার কথা। এ অনুযায়ী ওই ওয়ার্ডের নির্ধারিত ৬০০ জন টিসিবির কার্ডধারী টাকাসহ পণ্য নিতে আসেন।
এদিকে ডিলার ২৮০ জনকে পণ্য দেওয়ার পর বলেন এই মাসের পণ্য শেষ হয়ে গেছে। পরবর্তী মাসে পণ্য বরাদ্দ আসলে বাকিদের দেওয়া হবে। তখন উপস্থিত জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ডিলার আসাদুজ্জামান মুক্তা মিয়াকে সেখানকার একটি স্টুডিওর দোকানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বিল্পব ওয়াসিসহ স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে ওই ডিলার মুক্তি পান।
টিসিবির পণ্য নিতে আসা আবুল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। কিছু সময় পর ডিলার বলতেছে টিসিবির পণ্য শেষ। এটা কীভাবে সম্ভব?’
আবুল হোসেন আরও বলেন, ‘ডিলার মুক্তা মিয়া বেশি দামে অন্যত্র আমাদের বরাদ্দের পণ্য বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করা উচিত হয়নি তাঁর।’
এ সময় সাইফুল ইসলাম, জিয়াউল রহমান, আসাদুল হক, সোলেমান আলীসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, বরাদ্দ করা টিসিবির পণ্য ডিলার অন্য কোথাও বেশি দামে বিক্রি করেছে। পরে তাঁদের ভুল বোঝাচ্ছেন।
তাঁরা বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। টিসিবির পণ্য দিয়ে আমাদের অনেকের সংসারের অর্ধেক মাস পেড়িয়ে যায়। অথচ ডিলার আমাদের এ মাসের পণ্য দিল না। আমরা এখন কি করব?’
ডিলার আসাদুজ্জামান মুক্তা মিয়া বলেন, ধরনীবাড়ী বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা তাঁদের এলাকার টিসিবির কার্ডধারীদের পণ্য কার্ড দেখিয়ে ট্রাক থেকে নামিয়ে নেন। হয়তো কোনো ইউপি সদস্য বরাদ্দের থেকে বেশি পণ্য নামিয়ে নিয়েছেন। এ কারণে এখানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
মুক্তা মিয়া বলেন, ‘পরের মাসের বরাদ্দ করা পণ্য যারা পাইনি তাঁদের দেওয়া হবে। টিসিবির পণ্য অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। উত্তেজিত জনতাকে বিষয়টি আমি বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা বোঝেনি।’
ধরনীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বিল্পব ওয়াসি ডিলারকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই ওয়ার্ডের ৬০০ জন কার্ডধারীর মধ্যে ২৮০ জনকে টিসিবির পণ্য দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩২০ জন টিসিবির পণ্য না পেয়ে ডিলারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে মুক্ত করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা বলেন, ‘বিষয়টির খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’