ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কবে হবে, এটা নির্বাচন কমিশনের হাতে নেই। সময়ের ব্যাপারটা সরকারের হাতে। আমরা আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। নির্বাচন কবে হবে, এটা একটা ঐক্যমতের বিষয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদরের মথুরাপুর ডিগ্রি কলেজে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উপলক্ষে তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজার ও নতুন ভোটারদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, একটি সংস্কার কার্যক্রম চলমান আছে। কয়েকটা সংস্কার কমিশন এরই মধ্যে তাদের সুপারিশ পেশ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী, যদি রাজনীতি মতানৈক্য এমন একটি জায়গায় দাঁড়ায় যে তারা স্বল্প সংখ্যক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন চান, তাহলে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ। যদি আরও সংস্কার করার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব।
প্রধান উপদেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, এই সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে জাতীয় ঐক্যমতে একটি কমিশন গঠন করা হবে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আগে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যাতে করে নির্বাচন কার্যক্রম দ্রুত হাতে নেওয়া যায়।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘তবে আমরা নিশ্চিত করব মাঠ পর্যায়ে যারা দায়িত্বে পালন করবেন তারা যেন পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করেন। আমরা সতর্ক আছি। আমরা বিশ্বাস করি, মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট থাকবে।’
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ আরও বলেন, কিছু বিদেশি নাগরিক প্রতারণার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিক সাজতে চায়। বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। চাকরি-বাকরি ব্যবসা ইত্যাদির উদ্দেশ্যে, হীন কোনো উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে তারা এই সুযোগ নিতে চায়। এদের প্রতিহত করতে হবে। এ ধরনের অসততাকে কোনো জায়গা দেওয়া যাবে না। এ জন্য বেশি বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এ প্রবণতা ঠেকানোর জন্য দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৫৬টি উপজেলাকে নিয়ে একটি বিশেষ এলাকা ঘোষণা করেছি। তারা দূর-দূরান্ত থেকে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছে। নীলফামারী সদরে মাস দেড়েক আগে আমরা ১৯ জন রোহিঙ্গাকে পেয়েছি। গত তিন দিন আগে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পাওয়া গেছে পাঁচজন স্থানীয় ছেলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে ৫ জন মেয়েকে বিয়ে করে এনেছে। তাদের তো আমরা নাগরিক করতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার, যারা আগেই ভোটারের যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা বাদ পড়ে গিয়েছিল। তাদের আমরা পাচ্ছি এখন। আমাদের এবারের ভোটারের টার্গেট হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম, যাদের বয়স ৩৩-৩৪ থেকে শুরু। আমরা চাই এ জনগোষ্ঠী যেন ব্যাপক হারে ভোটে অংশগ্রহণ করেন। যাতে করে তারা ভোটাধিকারের অনুশীলন শেখে।’
মতবিনিময় সভায় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা, পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল হাসানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজারসহ নতুন ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন।