বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
যৌতুকের জন্য এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাত ১টার দিকে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের কাজীপাড়া বিলাইমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম রেশমা খাতুন (২৫)। তিনি গাইবান্ধা জেলার মৃত আসমত আলীর মেয়ে। অন্যদিকে অভিযুক্ত স্বামীর নাম মজিবর রহমান (৩৫)। তিনি দিনাজপুরের কাজীপাড়ার বিলাইমারী গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে ছয় বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
জানা যায়, আট বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী মজিবর যৌতুকের জন্য স্ত্রী রেশমা খাতুনকে নির্যাতন করতেন। স্ত্রী রেশমা নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রথম পর্যায়ে অসহায় বাবার পরিবারের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেন। কিছুদিন যাওয়ার পর স্বামী মজিবর পুনরায় যৌতুকের জন্য অত্যাচার করতে থাকেন। একপর্যায়ে স্ত্রী রেশমা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে যান। দীর্ঘদিন বাবার বাড়ি থাকার পর কয়েক দিন আগে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের আশ্বাসে আবারও স্বামীর বাড়িতে আনা হয়। কয়েক দিন ভালোভাবে কাটলেও গতকাল শনিবার রাত ১টার দিকে স্বামী মজিবর আরও ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্ত্রী রেশমার ওপর নির্যাতন চালান।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রেশমা খাতুন জানান, ‘শনিবার রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে আমার ওপর নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে আমার হাত-পা ও মুখে কাপড় বেঁধে মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়। সকালের দিকে গ্রামের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’
বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল মোকাদ্দেস বলেন, ‘রেশমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সুষ্ঠু চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। হাসপাতালে ভুক্তভোগীকে দেখে আসা হয়েছে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’