নীলফামারীর ডিমলায় দুলালী আকতার (২১) নামের এক কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। অভিযোগ উঠেছে গোপনের বিয়ে করা স্বামীর পরিবারকে যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের কাকড়া এলাকার এই ঘটনা ঘটে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।
কলেজছাত্রী দুলালী উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের কাকড়া এলাকার মৃত তফছের আলীর মেয়ে। অন্যদিকে অভিযুক্ত নাউতারা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাকড়া গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে বাবুল হোসেন।
কলেজছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে প্রেম করে গোপনে বিয়ে করেন তাঁরা। দুলালি রংপুর বেগম রোকেয়া কলেজ ও বাবুল রংপুর কারমাইকেল কলেজে সম্মান শ্রেণিতে লেখাপড়া করতেন। প্রায় দুই বছর আগে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রংপুরের একটি কাজি অফিসে ২০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে দুলালি ও বাবুল বিয়ে করেন। এ সময় বিয়ের বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যদের না জানানোর জন্য দুলালিকে চাপ দেন বাবুল।
বিয়ের ছয় মাস পার হলেও বিষয়টি কাউকে জানাননি দুলালি। কিন্তু বাবুলের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন দুলালি। কিন্তু দুলালির কথায় রাজি না হয়ে তাঁকে ঘরে তুলতে মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করেন বাবুল। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে দুলালির পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বাবুল ও তাঁর পরিবার।
দুলালির বড় ভাই জমসের আলী বলেন, ‘এ বিষয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। একপর্যায়ে ৮ লাখ টাকা যৌতুক দিতে রাজি হই। কিন্তু বাবুল ও তাঁর পরিবার ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করায় কোনো প্রকার সমঝোতা হয়নি।’
এত টাকা দিতে না চাইলে দুলালিকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে না তুলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামী বাবুল। পরে এই নির্যাতন সইতে না পেরে কলেজছাত্রী দুলালি নিজ বাড়িতে শুক্রবার রাতে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন। পরে পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে বিষয়টি ডিমলা থানায় অবহিত করেন।
অভিযুক্ত বাবুলের বড় ভাই মহিকুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘দুলালি তাঁর পারিবারিক কারণে আত্মহত্যা করেছেন। আমরা কখনো যৌতুকের জন্য চাপ দিই নাই।’
ডিমলা থানার তদন্ত কর্মকর্তা বিশ্বদেব রায় জানান, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।