অষ্টম শ্রেণির পুতুল (১৪) ও পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া কবিতা রানী (১০) নামে দুই ভাগনি দুর্ঘটনার শিকার নৌকার নদী পার হওয়ার জন্য উঠেছিলেন। নৌকার ডুবে যাওয়ার সময় সবার সঙ্গে নিখোঁজ হয় তারা। জীবিত পাওয়ার আশা নেই এখন। ভাগনিদের মরদেহ পেতেই করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে বসে অপেক্ষা করছেন মামা সুমন চন্দ্র বর্মন।
পুতুল ও কবিতা বোদা উপজেলা সাকুয়া ইউনিয়নের গোবিন্দগুরু গ্রামের শৈলেন কুমারের মেয়ে।
ঘটে অপেক্ষারত অবস্থায় ভাগনিদের মরদেহ পাওয়ার অপেক্ষা নিয়ে কাঁদছেন সুমন চন্দ্র বর্মন। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠ নিয়ে তিনি বলেন, ‘গতকাল পূজার জন্য মন্দিরে যাওয়ার পথে ওই নৌকাতে ওঠে আদরের দুই ভাগনি। তাদের নিখোঁজের খবরে আমার বোন বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাঁর শরীরে স্যালাইন লাগিয়ে দিয়েছে ডাক্টার। কান্না থামানো যাচ্ছে না। মেয়ে দুটোর মুখ দেখার জন্য ছটফট করছে। বোনকে কী জবাব দেব! এ জন্য ঘাট থেকে বাড়িতে ফিরে যাইনি। লাশ দুটো উদ্ধার করে দেন। অন্তত বোনকে মেয়েগুলোর মরামুখ দেখিয়ে সান্ত্বনা দিতে পারব।’
নিখোঁজ মেয়েদের বাবা শৈলেন কুমার বলেন, ‘দুটি সন্তান আমার। ভগবান তাও কেড়ে নিলেন। কী নিয়ে বাঁচব! ওই নৌকায় আমি মরে গেলাম না কেন?’
গতকাল রোববার বিকেল ৩টায় পঞ্চগড়ের বোদায় উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নে অবস্থিত করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক পুণ্যার্থী নিয়ে বদ্বেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিল একটি নৌকা। নদীর মাঝে গিয়ে মোড় নেওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
গতকাল থেকে স্থানীয় জনগণ, প্রশাসনের লোকজন, রংপুর ও রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে এ পর্যন্ত ৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।