হোম > সারা দেশ > রংপুর

ট্যানারিমালিকদের কাছে পাওনা সাড়ে ৩ কোটি টাকা, সৈয়দপুরে চামড়া বিক্রি নিয়ে সংশয়

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী

ঢাকার ট্যানারিমালিকদের কাছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাওনা সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ীদের। গত ছয় বছরে এই পরিমাণ অর্থ বাকি পড়েছে। এসব পাওনা টাকা অনাদায়ে পুঁজি সংকটে পড়েছেন সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ীরা। আর্থিক সংকটের কারণে এবারের ঈদুল আজহায় চামড়া কেনার কোনো রকম প্রস্তুতি নিতে পারেননি তাঁরা। 

ঢাকার ট্যানারিমালিকদের কাছ থেকে বকেয়া আদায় ও মূলধন সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ী এই ঈদে চামড়া কিনতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। ফলে সৈয়দপুরে এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।  

সূত্রমতে, নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে বঙ্গবন্ধু সড়কসংলগ্ন চামড়ার গুদাম নামে একটি মহল্লা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সেখানে চামড়া গুদামগুলো আর নেই। 

পাকিস্তান আমলে এটি দেশের উত্তরাঞ্চলে চামড়া ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এখানে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও রংপুরের ব্যবসায়ীরা গরু-ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে আসতেন। সৈয়দপুর আড়তের এসব চামড়া দেশের চাহিদা মিটিয়ে রেলপথে ভারতে রপ্তানি করা হতো। সে সময় চামড়ায় মুনাফা লাভের সুবাদে এখানে চামড়া ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়েছিল। স্বাধীনতার পর শিল্পটি লোকসানের মুখে পড়লে বন্ধ হয়ে যায় আড়তটি। 

সূত্রমতে, বিগত ১৩-১৪ বছর আগেও সৈয়দপুরের আড়ত থেকে ঈদের মৌসুমে ১০ কোটির অধিক টাকার চামড়া রপ্তানি হতো ঢাকার ট্যানারিমালিকদের কাছে। কিন্তু গত ৭-৮ বছর ধরে চামড়ার দরপতনের ফলে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ে। অন্যদিকে ঢাকার ট্যানারিমালিকেরা চামড়া কিনে ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করছেন না। ফলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করলেও সব পুঁজি রয়ে গেছে ট্যানারিমালিকদের কাছে। বছরের পর বছর বকেয়া টাকা তুলতে না পেরে অনেকে এ ব্যবসা ছেড়ে দেন। এখন সৈয়দপুরে চামড়া ব্যবসার সঙ্গে হাতে গোনা ১০-১২ জন ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছেন। 

সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ী মো. সরফরাজ মুন্না আজকের পত্রিকাকে জানান, এখন চামড়া ব্যবসায়ীরা ঈদে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে চামড়া কেনেন। ট্যানারিতে চামড়া বিক্রি করে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ট্যানারিমালিকেরা সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ীদের সাড়ে তিন কোটি টাকার অধিক বকেয়া রেখেছেন। পুঁজি সংকটের কারণে এবারেও চামড়া ব্যবসায়ীদের মাঝে চামড়া কেনা নিয়ে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। 

ডিমলা উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ী মহসিন আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমানে গরুর চামড়া প্রকারভেদে ২০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ১০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্য ট্যানারিমালিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে করা হয়। ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ীদের জন্য নয়। আর এটি লবণযুক্ত মাল হওয়ায় আবার বেকায়দায় পড়ে তাঁদের সিন্ডিকেটের দামে চামড়া দিতে অনেকটাই বাধ্য হই।’ 

তিনি বলেন, এবারে বিশেষ করে ছাগলের চামড়া সংরক্ষণ করতে গেলে চামড়া ব্যবসায়ীরা পথে বসতে হবে। লবণ ও মজুরির দামের কারণে ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারাবে নিশ্চিত। 

সৈয়দপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ও মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আজিজুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরে ঢাকার ট্যানারিমালিকেরা আমাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করছেন না। চলতি বছরের চামড়ার ২৫ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করেছেন তাঁরা। ফলে আমরা স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংকগুলো নতুন করে ঋণও দিচ্ছে না। সত্যিকারে ট্যানারিমালিকদের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। তাই এবারে ঈদে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’

বাক্সবন্দী লাখ লাখ টাকার যন্ত্র

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ধাক্কা খেয়েছে জনগণের প্রত্যাশা: নুর

লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু

মানুষের কষ্টের আগুনে পেট্রল ঢেলেছে সরকার: নুরুল হক

দেড় কিলোমিটার দূরে পুলিশের ফায়ারিং রিহার্সাল, বাড়িতে গুলিবিদ্ধ কিশোরী

ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির মহোৎসব

গাইবান্ধায় দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে গিয়ে প্রাণ গেল ইউপি সদস্যের

পঞ্চগড়ের মানুষ চাইলে সারজিস কিংবা কোনো তরুণ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন

মিজানুর রহমান আজহারী লালমনিরহাট যাচ্ছেন শনিবার

শুধু একটি ভোটের জন্য এই গণ-অভ্যুত্থান হয়নি: নুরুল হক নুর

সেকশন