সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্ষুদ্রঋণের আবেদনপত্রে স্ত্রী স্বাক্ষর না করায় স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে সৈয়দপুর শহরের কয়ানিজ পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম মিজানুর রহমান বাবু (৪০)। তিনি একই এলাকায় মৃত রোস্তম আলীর ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে মিজানুর রহমানের একটি ফটো স্টুডিও রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন আগে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে নিজ প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যেতে পারতেন না। এতে ব্যবসায় লোকসান হতে থাকে। আর্থিক সংকটে পড়ে স্থানীয় এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনজিও) ঋণের জন্য আবেদন করেন। আবেদনপত্রে স্ত্রীর স্বাক্ষর নিয়ে আগের দিন রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়।
স্ত্রী আবেদনে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তার স্বামীকে বলেন, ‘এমনিতেই আগের অনেক ঋণ আছে। এরপর তুমি অসুস্থও। তোমার কিছু হলে আমি এই ঋণগুলো পরিশোধ করব কীভাবে?’
পরদিন সোমবার সকালে মিজানুর আবারও স্বাক্ষর করার কথা বলেন। তখন স্ত্রী সাক্ষর করবেন না বলে সাফ জানিয়ে বাড়ির বাইরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখে মিজানুরের ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে দেখেন দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন তিনি।
পরে তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে মিজানুরকে উদ্ধার করে স্থানীয় ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ সম্পর্কে জানা যাবে। তখন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।