রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে রোগী হয়রানির অভিযোগ তুললেন খোদ অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট। সাধারণ মানুষ যেখানে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়ে প্রতিকার পাচ্ছে না, সেখানে একজন চিকিৎসকের অভিযোগের বিষয়টি আলোড়ন ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই অভিযোগের কপিটি শেয়ার করে এর প্রতিকারের দাবি তুলছেন।
জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট এ বি এম রাশেদুল আমীর তাঁর অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গিয়ে বকশিশ সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র, রমেক অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর।
অভিযোগে রাশেদুল আমীর উল্লেখ করেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর মা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য ২৫০ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মা পরিচয় জানতে পেরে ৫০ টাকা ভর্তি বাবদ নেন। যদিও হাসপাতালে নির্ধারিত ভর্তি ফি ২৫ টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তার মা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ভর্তি ফি না নেওয়ার কথা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভর্তি-পরবর্তী সিসিইউতে অসুস্থ মাকে নেওয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে কর্মরত দুজন জোরপূর্বক তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর কাছ থেকে ২০০ টাকা বকশিশ নেন।
রাশেদুল আমীর বলেন, ‘এ ঘটনা আমার কাছে অত্যন্ত মানসিক পীড়াদায়ক এবং অপমানজনক। যে প্রতিষ্ঠানে আমি সেবা দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে আমি হয়রানির শিকার হচ্ছি তা সত্যি দুঃখজনক। আমি নিজে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা হয়েও যদি হয়রানির শিকার হই, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা তো সহজেই অনুমেয়।’
অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ অনুসন্ধানপূর্বক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হয়রানি বন্ধ এবং সেবার মান বৃদ্ধিতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান রাশেদুল আমীর।
এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান বলেন, ‘গত ১৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট এ বি এম রাশেদুল আমীরের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’