গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাবিরাটে সাঁওতালদের ভূমি ও জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সমাবেশ হয়েছে। আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ‘আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ’ ও ‘সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ’ যৌথভাবে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। গাইবান্ধা আইন কলেজের ছাত্র ব্রিটিশ সরেন প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাটে ব্রিটিশ সরেনের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এতে বক্তব্য দেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু, সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের সদস্যসচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, সমাজকর্মী মনির হোসেন সুইট, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব হাসান মোর্শেদ দীপন, মানঝি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাখন মার্ডি, সহসাধারণ সম্পাদক রূপ সরেন, কোষাধ্যক্ষ শ্যামল হেমব্রম, সদস্য তারামনি সরেন, শ্যামবালা হেমব্রম, জুলিয়াস সরেন, মেরিনা সরেন, লিমা মুরমু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ৩ জানুয়ারি রাজাবিরাটে ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে হামলা করে স্থানীয় রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁর পালিত ভূমিদস্যুরা। তাঁদের বেদম মারধরে ব্রিটিশ সরেনের মা ফিলুমিনা হাসদা গুরুতর আহত হন। তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাতে চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় তাঁর ভাই জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে রাজাহার ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ৬ জনের উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের নামে মামলা করেন। রফিকুল চেয়ারম্যান গা ঢাকা দেন। পরে পুলিশ তাঁকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত। তাঁরা জামিনে মুক্ত হয়ে সাঁওতালদের কৃষিতে সেচে বাধা দেওয়াসহ দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি করছেন।’
বক্তারা অভিযোগ করেন, রফিকুল চেয়ারম্যান এলাকার সাঁওতালদের একমাত্র সমাধিস্থল শক্ত নেট দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রাজাবিরাটের নিরীহ সাঁওতালদের ভূমি ও জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানান বক্তারা।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সমাধিস্থল ও দখলকৃত পুকুরপাড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।