‘হামারগুলার মতো গরিব মানুষেরা যাতে রমজান মাসে তেল, চিনি, কালাই, ছোলা কম দামে কিনি খাবার পায় এ জন্য সরকার হামাকগুলাক টিসিবি দেয়। কিসের কি কম দামে কিনি খামো। সেই সকাল ৮টার সময় কাজকাম ছারি আসচুং, রইদোত দারে থাকনুং, এলা বাজে ৫টা, কোনো মাল পানুং না।’
আজ শনিবার সারা দিন লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির পণ্য না পেয়ে এভাবে আক্ষেপ করে বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের আজিবর রহমান। তিনি আরও বলেন, ‘মাল দেওয়ার আগত ডিলারের লোকজন টাকা নিয়া থুয়া দিছে। আর কোনো খবর নাই। দুই টাকা বাঁচপার আসি যদি একটা দিন পরে তাহলে এমার এগুলা মাল নিয়া লাভ কী? বর্তমান যে কামলার দাম দিনটাত কাজ করলে ৫০০ টাকা পানুং হয়। সারা দিন গেল এখন পর্যন্ত মাল মানুং না।’
জানা গেছে, সারা দেশের মতো রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পবিত্র রমজান উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভর্তুকিমূল্যে ছোলাসহ নিত্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে। রোজা উপলক্ষে দেশব্যাপী ১ কোটি ফ্যামেলি কার্ডধারী টিসিবির পণ্য কিনতে পারবে। ৪টি পণ্য ৪৭০ টাকার প্যাকেজে বিক্রি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার মেসার্স নাফিসা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের চরচিলাখালের শ্রীমতী রেনু বালা বলেন, ‘বাবা মুই সেই সকাল ১০টায় আসচুং, এলা পাঁচটা বাজে এলাং পাং নাই টিসিবির মাল নিবার।’
একই এলাকার আলম মিয়া বলেন, ‘সাত ঘণ্টা হনুং আসবার আরো যে কয় ঘণ্টা লাগবে আল্লাহ জানে। রাইতোত এই চর বাড়ির রাস্তাত ৬-৮ কিলো রাস্তা কেমনে যাইম, টাকা আগোত জমা দিয়া আরো বিপদত পরচুং বাবা।’
শুধু আজিবর, রেনু বালা, আলম মিয়া নন-এ সময় টিসিবির পণ্য কিনতে আসা প্রায় ৫০ জনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে, ডিলারের অব্যবস্থাপনার কারণে তাঁদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় এবারে টিসিবির নতুন ডিলার ১৪ জনের মতো বেড়েছে, কীভাবে মালামাল সরবরাহ করতে হবে তাঁদের জানা নেই। তাঁদের অব্যবস্থাপনার কারণেই জনসাধারণের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’ মাল কম দেওয়ার বিষয় তিনি বলেন, ‘আমাকে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা কিছু ভিডিও পাঠিয়েছে। ভিডিওগুলো আমি দেখেছি। কম দেওয়ার বিষয় তাঁদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে।’