প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলত ফুটপাতে ফুচকা ও চটপটি বিক্রি। দোকান বন্ধ হলে রাতে পড়াশোনা শুরু হতো তাহিবুল ইসলামের। গভীর রাত পর্যন্ত চলত পড়াশোনা। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় ফাজিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তাহিবুল।
তাহিবুলের বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের পূর্বপাড়ায়। তাঁর বাবার নাম বাদল হোসেন। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় সন্তান তাহিবুল। তিনি এবার বিরামপুর চাঁদপুর ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ২০২২ সালের আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
বিরামপুর মেইন রোড ঢাকাগামী কোচ কাউন্টারের সামনে গেলেই চোখে পড়বে একটি ঝকঝকে ভ্যান গাড়িতে ফুচকা ও চটপটি বিক্রয় করছেন তাহিবুল। বাবার পক্ষে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু ইচ্ছা আর অদম্য মনোবলের কারণে দারিদ্র্যকে জয় করে ফুচকা ও চটপটি বিক্রির উপার্জিত অর্থে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে তাহিবুল। এই কষ্টের পরে মিলেছে সুফলও। এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ-৫।
তাহিবুলের এমন সাফল্যে পরিবারসহ এলাকার সবাই খুশি। তাঁর ক্রেতারাসহ সবাই অভিনন্দন জানিয়েছে তাঁকে।
তাহিবুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্তরিকতায় সবকিছু সম্ভব হয়েছে। সারা দিন ফুচকা বিক্রি শেষে রাতের বেলায় যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু সময় পড়াশোনা করে আমার এ সাফল্য অর্জন। আমার স্বপ্ন উচ্চশিক্ষা লাভ করে চাকরি করা। লেখাপড়া চালাতে শুধু চটপটি বিক্রি নয় সম্মানজনক যে কোনো কাজ বা পরিশ্রম করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই আমার।’
তাহিবুলের বড় ভাই স্নাতক পাস করেছেন। বড় বোন বিরামপুর সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ও ছোট বোন নর্থ বেঙ্গল কেজি স্কুলে পড়াশোনা করছে।
এ বিষয়ে বিরামপুরের চাঁদপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ ফ ম হুমায়ুন কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এবার মোট ৬ জন-ছেলে মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে চটপটি বিক্রেতা তাহিবুল একজন। আমি তাহিবুলের সাফল্য কামনা করছি ও সামনের দিন গুলোতে আরও ভালো করবে।