দিনাজপুরে বিএনপির বিভাগীয় পদযাত্রায় আসা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
আজ বুধবার বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটে। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় উভয় দলের নেতা-কর্মীরাও বাঁশ, কাঠ ও লোহার রড নিয়ে পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ২টার দিকে সৈয়দপুর থেকে ব্যানার-ফেস্টুনসংবলিত ১০টি বাস দিনাজপুরে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় পদযাত্রায় আসার পথে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা হাত উঁচিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁদের গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরে গাড়ি থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নামলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি থানা-পুলিশের দুটি দল বাঁশেরহাট এলাকায় অবস্থান নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গাড়িতে যাওয়ার সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অশ্লীল গালিগালাজ করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল। তাদের থামিয়ে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু পরে তারা চড়াও হয়েছে ছাত্রদের ওপরে। কয়েকজন ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে।’
সংঘর্ষে আহত সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব আসিফ ইকবাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলায় আমার দুই পায়ে আঘাত পেয়েছি। রক্তাক্ত অবস্থায় সহকর্মীরা উদ্ধার করে এখানে নিয়ে এসেছে। আরও আহত হয়েছেন সৈয়দপুর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন। তিনি হাতে ও মাথায় আঘাত পেয়েছেন।’
সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই সড়ক দিয়ে নীলফামারী, সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬০টির মতো বাস ও মাইক্রোবাসে নেতা-কর্মীরা আসছিল। শেষের দিকে প্রায় আট-নয়টি গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ক্যাডাররা এ হামলা চালায়।’ তবে কতজন আহত হয়েছেন তা তিনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।
এ বিষয়ে হাবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মামুনুর রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি, তাদের (বিএনপি নেতা-কর্মীদের) উসকানি ছিল। আধা ঘণ্টা আগে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ছেলেদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ কাজ করছে। পদযাত্রা কর্মসূচিতে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন সুশৃঙ্খলভাবে যেতে পারেন সে জন্য পুলিশ রয়েছে।’