কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার ভয়াবহ বন্যার কবলে। ভারত সকল পানি ছেড়ে দিয়েছে আমাদের ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য। আমরা ৫৩ বছর ধরে শুনে আসছি, ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু। এবার তারা পানি ছাড়ল, কিন্তু আমাদের বললও না। যদি উজানের কোনো দেশ আকস্মিক পানি ছেড়ে দেয়, কিন্তু ভাটির দেশকে না জানায়, তাহলে এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এটা প্রতিবেশীর শিষ্টাচার। কিন্তু আমরা তাদের শাস্তি চাচ্ছি না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দুটি প্রতিবেশী দেশ একসঙ্গে বসবাস করতে চাই। আশা করি, ভবিষ্যতে তারা এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবে।’
আজ শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কলেজ পয়েন্টে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণের সময় পথসভায় ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা সরকার ছিল। তারা আমাদের সিঙ্গাপুর উপহার দিয়েছিল। এই আমাদের রাজনগরের সিঙ্গাপুর। প্রতিবছর নদীশাসনের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়। কিন্তু এটাকে সুষ্ঠুভাবে কাজে না লাগিয়ে লুটপাট করা হয়। লুটপাটের কুফল যন্ত্রণা জনগণকে ভোগ করতে হচ্ছে। এখন তারা বস্তা নিয়ে পালায়। এখন বন্যার স্রোতে মাছ ভাসতেছে, ওরাও এখন খালে–বিলে ভাসতেছে। জনগণ সেখান থেকে তাদের ধরছে। এখন মানুষ মাছ ধরার পলো দিয়ে তাদের ধরতেছে।’
জামায়াত নেতা ডা. শফিক বলেন, ‘কয়েক দিন আগে বাংলাদেশে বিরাট একটি পরিবর্তন এসেছে। সাড়ে ১৭ বছর জাতির ঘাড়ে দুর্বহ বোঝা চাপিয়ে রাখা হয়েছিল। প্রথম দুই বছর আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল মঈন-ফখরুদ্দিন সরকার। তার পরের ১৫ বছর সরাসরি তারা নিজে। এই সাড়ে ১৫ বছরে জাতির কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথম আঘাত হেনেছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ওপর। পিলখানায় বিডিআরের সদর দপ্তরে নারকীয় হত্যাকাণ্ড করা হয়। সেখানে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকস সামরিক অফিসারকে হত্যা করা হয়।’
পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, সিলেট দক্ষিণ জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, সাবেক জেলা আমির মো. আবদুল মান্নান, জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলী, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মো. আলা উদ্দিন শাহ প্রমুখ।
এ সময় জেলার রাজনগর, কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ উপজেলার ৫০০ জন বন্যার্তকে ১৫ কেজি করে ত্রাণ উপহার দেওয়া হয়।