দূর-দিগন্ত আড়াল করে দাঁড়িয়ে আছে চিরসবুজ পাহাড়। আর তার কোল ঘেঁষে হাওরের বুকজুড়ে লাল শাপলার হাসি। দুই মিলে যেন চিত্রপটে আঁকা সবুজের প্রেক্ষাপটে লালগালিচা।
নয়নাভিরাম এ দৃশ্য সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে। সেখানকার বিকিবিল হাওরে প্রায় এক হাজার একরজুড়ে বর্ষা-শরতের এ সময়টাতে দেখা যাবে লাল শাপলার বাহার।
শাপলার রাজ্য ঘুরতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকেরা ভিড় জমান এ হাওরে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা মুগ্ধ হন লাল শাপলার সৌন্দর্যে। সঙ্গে আছে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের অপরূপ সবুজের শোভা।
তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে বিকিবিল হাওরের অবস্থান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুষ্ক মৌসুমে এ হাওরে ধান চাষ করা হয়। এরপর বর্ষার শুরুতে যখন হাওরে পানি বাড়তে থাকে তখন পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গজিয়ে উঠতে থাকে শাপলাগাছ। বর্ষার শেষের দিকে গিয়ে ফুল আসে। তখন দেখে মনে হয় হাওরজুড়ে যেন লালগালিচা বিছানো। এ দৃশ্য থাকে ছয় মাসের মতো। তবে বর্ষা শেষে শরতের এ সময়টাতেই পাওয়া যাবে লাল শাপলার অসাধারণ শোভা। বিকিবিলকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন থেকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণাও করা হয়।
বিকিবিলের একদিকে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, অন্যদিকে টাঙ্গুয়ার হাওর। যাঁরা টাঙ্গুয়ার হাওর বা বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে আসেন, তাঁরা খুব সহজেই এই লাল শাপলার বিলে একবার ঘুরে যেতে পারেন।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক মমতাজ আহমদ বলেন, ‘শুনেছি এখানে ১৫-১৬ বছর ধরে লাল শাপলা ফুটছে।
তবে কেউ এর খবর জানে না। দেশের অন্যান্য শাপলার বিল থেকে এখানে সবচেয়ে বেশি লাল শাপলা দেখতে পেলাম।’
বিকিবিলসহ সুনামগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ট্যুরিজম বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যটকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কীভাবে বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা চলছে।