নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় স্কুলে যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে নুছরাত ফেরদৌস রিমু (১৩) নামে এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ছত্রিশ ও পিঠাইটিকর গ্রামের মাঝামাঝি বুড়িকেয়ারি বিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নুছরাত ফেরদৌস রিমু উপজেলার ছত্রিশ গ্রামের সেজু মিয়ার মেয়ে এবং স্থানীয় ফরিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
খবর পেয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এর আগেই স্থানীয় জেলেরা জাল দিয়ে খুঁজে রিমুকে উদ্ধার করে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার বিকেলে রিমুর বাড়িতে গিয়ে দেখা মিলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। মা আমেনা খাতুন বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। রিমুরা দুই বোন, এক ভাই। রিমু ছিল সবার বড়। পরিবারের সবার সঙ্গে কান্নাকাটি করছে অবুঝ ভাইবোন নুসরাত ফেরদৌস সিমু (৭), আহবাব হাসানও (৩)। বাবা সেজু মিয়া দুবাই প্রবাসী।
রিমুর চাচা কামাল আহমদ অভিযোগ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের মতো যেন আর কারও সন্তান এভাবে না হারায়। এখন আমার ভাইকে কী বলব!’
উদ্ধারকারী স্থানীয় দুই যুবক জানান, ‘নৌকাটা পার থেকে বেশি দূরে ছিল না। নৌকাটি ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা পানিতে নেমে সাঁতরে তাদের উদ্ধার করতে যাই। ছাত্রীরা পানিতে পড়ে ভয়ে এলোমেলো হয়ে যায়। পিঠের স্কুল ব্যাগের জন্য অনেকেই সাঁতরাতে পারছিল না। আমরা একজন দুজন করে টেনে ও নৌকা দিয়ে তীরে তুলছিলাম। সবশেষে জানলাম একজন নিখোঁজ আছে। আমরা জাল ফেলে নিখোঁজ রিমুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।’
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এমাজুর রহমান রিপন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১১টায় ওই শিক্ষার্থীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯ টায় স্কুলে যাওয়ার জন্য নৌকাযোগে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বুড়িকেয়ারি বিল পাড়ি দেওয়ার সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় ১৭-১৮ জনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করলেও পানিতে তলিয়ে যায় রিমু। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় জেলেদের মাধ্যমে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে রিমুর মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের জন্য অনুমতি দিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।’