সিলেট নগরের বন্দরবাজারে ব্যবসায়ী ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের মাঝে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ আহত হয়েছেন।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ৩০-৩৫টি গাড়ি ও পাঁচটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় ঘণ্টা তিনেক সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর বেলা ৩টার দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষকে বৈঠকে বসানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া বেলা ৩টা পর্যন্ত চলে। যত্রতত্র পার্কিং নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বেলা পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে থামিয়ে বৈঠকে বসানোর উদ্যোগ নেয়।
ঘটনার পর বন্দরবাজার এলাকা অবরোধ করেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকেরা। বৈঠক শেষে বিকেল ৪টার দিকে তাঁরা রাস্তার অবরোধ তুলে নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) উপকমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আলম।
বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি বলেন, ‘যত্রতত্র পার্কিং নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে আসি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। আমাদের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ বৈঠক করেছেন। ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। রাত ৮টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে আবার বৈঠক হবে। আশা করি, সেখানে সুন্দর সমাধান হবে। চালকেরা রাস্তার অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক। জনগণের যাতে কোনো ধরনের ভোগান্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে পুলিশ।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বন্দরবাজার এলাকার সিটি সুপার মার্কেটের সামনে রাস্তায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা পার্কিং ও যাত্রী ওঠানো-নামানো নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। আজ বেলা ১টার দিকে মার্কেটের সামনে একটি অটোরিকশা যাত্রী নামিয়ে ভাড়া নিতে গেলে ব্যবসায়ীরা গাড়ি সরাতে বলেন।
এ সময় ওই অটোচালক ও ব্যবসায়ীদের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হলে কয়েকজন অটোচালক জড়ো হয়ে ব্যবসায়ীদের দিকে মারমুখী হন এবং দুপক্ষের মাঝে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে কিছুক্ষণ পর দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয় এবং অটোচালকেরা পিছু হটেন। এর কিছুক্ষণ পর ফের তাঁদের ধাওয়া করে বন্দরবাজার ছাড়া করেন ব্যবসায়ীরা।
সে সময় অজস্র ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন ব্যবসায়ীরা। হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় সিটি মার্কেটের পাঁচটি দোকান, প্রাইভেট কার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ৩০-৩৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৫-২০ জন আহত হন।
তিনি বলেন, কোনো নির্দেশনা না মেনে চালকেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সিটি মার্কেট, সিটি করপোরেশন, কুদরত উল্লাহ মসজিদ মার্কেট ও পোস্ট অফিসের সামনে সড়ক দখল করে পার্কিং করে রাখে, করে যাত্রী ওঠানামা। প্রথমে সবজিওয়ালারা, তারপর সিএনজিওয়ালা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে এসব করে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আজ কথা বলতে গেলে চালকেরা মারমুখী আচরণ করে এবং ব্যবসায়ীকে মারধর করে সিটি মার্কেটের পাঁচটি দোকান ভাঙচুর করেন।
এসএমপির উপকমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সংঘর্ষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় উভয় পক্ষের ৮–১০ জন আহত হয়েছেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ৩০-৩৫টি গাড়ি ও ৫টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।’