Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > সিলেট

ওসমানী হাসপাতালের দুই মামলার প্রধান আসামি দিব্য গ্রেপ্তার

সিলেট প্রতিনিধি

ওসমানী হাসপাতালের দুই মামলার প্রধান আসামি দিব্য গ্রেপ্তার

সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই ছাত্রের ওপর হামলা ও হাসপাতালের শিক্ষানবিশ এক চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে করা পৃথক দুই মামলার প্রধান আসামি দিব্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দুই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো।

আন্দোলনরত শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণ না হলে তাঁরা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেবেন বলে ঘোষণাও দিয়েছিলেন। তাঁদের এই বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর শাহপরান এলাকা থেকে দিব্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের সঙ্গে গত রোববার দুপুরে এক রোগীর দুই স্বজনের বাগবিতণ্ডা হয়। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা এ সময় ওই দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা হয়।

ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার রাত ৮টার দিকে ইমন আহমদ ও রুদ্র নাথ নামে দুই শিক্ষার্থীর ওপর কলেজের পেছনে হামলা হয়। আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন সহপাঠীরা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাত ১০টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। তাঁরা হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। এ ছাড়া কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এবং সিলেট আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পরে রাত ১টার দিকে আন্দোলনরতদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মেডিকেল প্রশাসনের মামলা করাসহ পাঁচ দাবি জানান।

তাঁদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে রাত ৩টার দিকে ধর্মঘট ও অবরোধ স্থগিত করেন আন্দোলনরতরা। তবে তাঁরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে মঙ্গলবার বেলা ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বেলা ২টায় আন্দোলনরতদের সঙ্গে কলেজ, হাসপাতাল, পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ফের বৈঠকে বসেন।

 বৈঠকে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় বৈঠক শেষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। পরে বিকেলে তাঁরা কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তবে শুধু ইমার্জেন্সি ও হৃদরোগ বিভাগে সেবা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।

এদিকে, ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে লাঞ্চিতের অভিযোগে আটজনকে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করা হয়। ওসমানী হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিএ-টু প্রিন্সিপাল ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহমুদুল রশিদ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। দুই মামলার আসামিরা হলেন- দিব্য, আব্দুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। আসামিদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে সাঈদ হাসান রাব্বি (২৭) ও এহসান আহমদকে সোমবার দিবাগত রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রাব্বি সিলেট মহানগরীর ৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

বুধবার দুপুরের দিকে ওসমানী হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সড়ক অবরোধ করেন। পরে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও হাসপাতালের এক নারী শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে লাঞ্চিতের প্রতিবাদ এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার রাত থেকেই এ আন্দোলন শুরু হয়।

এর আগে মঙ্গলবার পুলিশ, হাসপাতাল প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক হলেও কোনো সমঝোতা হয়নি। মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়ায় ওসমানী হাসপাতালের জরুরি ও হৃদরোগ বিভাগ ছাড়া সকল বিভাগে কার্যক্রম বন্ধ রাখেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা।

বুধবার সকাল থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন আন্দোলনকারীরা। পরে তাঁরা বিক্ষোভ করে দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে হাসপাতালের মূল ফটকও বন্ধ করে দেন তাঁরা। ঘণ্টাখানেক পর প্রশাসনের অনুরোধে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।

এ সময় কর্মবিরতি ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান বলেন, ‌আগামীকাল সকালের মধ্যে মূল আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে আমরা বহির্বিভাগ, জরুরি ও হৃদরোগ বিভাগসহ হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখব।

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আন্দোলন করলেও হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, তারপরও কিছু সমস্যা তো হচ্ছেই। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বড় একটা রোল প্লে করে। এটা সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতেই। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হবে।

আন্দোলনকারীদের দাবি প্রসঙ্গে মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জায়গা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি জানে। তারা ওপর থেকে কাজ করছেন। এখানকার ডিজি স্বাস্থ্য এবং ডিজি স্বাস্থ্য-শিক্ষাও খোঁজ রাখছেন।

হাসপাতাল পরিচালক আরও বলেন, 'আমাদের আশা আসামিরা তাড়াতাড়ি গ্রেপ্তার হবে এবং আমরা স্বাভাবিক কাজে ফিরে যাবো।’

বর্তমানে অন্যান্য ডাক্তার ও স্টাফ যারা আছেন, তাঁরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি-রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সিলেটে শনিবার শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক শিক্ষামেলা

বারকি নৌকায় এবার ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর লুট

সুনামগঞ্জে ধান আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু

মে দিবসে খোলা থাকবে সিলেটের হোটেল-রেস্টুরেন্ট

ফের সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল কিবরিয়া হত্যা ও সুরঞ্জিত হত্যাচেষ্টা মামলার

ভারতে নির্যাতনের শিকার দুই বাংলাদেশি ফিরলেন দেশে, অতঃপর...

শিশুকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে ছড়িয়ে দেওয়া হলো ভিডিও

ক্ষমতার চেয়ারে যে বসে, সে-ই সবকিছু লুটেপুটে খেতে চায়: ধর্ম উপদেষ্টা

বন্ধ দোকান থেকে ছড়াচ্ছিল দুর্গন্ধ, খুলে মিলল মালিকের লাশ