শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় দিরাইয় উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের নিহত নয়জনের স্বজনের আহাজারি থামছে না। এ দুর্ঘটনায় কারও ভাই, কারও বাবা, কারও ছেলে চিরতরে চলে গেছেন পরপারে। তাঁদের জীবনের গল্প আলাদা। তবে তাঁদের হারিয়ে স্বজনদের সবার দুঃসহ বেদনা ও কষ্টের অনুভূতি একই ধরনের। তাঁদের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না স্বজনেরা। পরিবারে চলছে কান্নার রোল।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক কুতুবপুর এলাকায় আজ বুধবার ভোরে ট্রাক-পিকআপের সংঘর্ষে নয়জন নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের হারিছ মিয়া (৫০), সৌরভ (২৫), সাধু মিয়া (৪০), তায়েফ নুর (৪৫), সাগর (১৮), রশিদ মিয়া (৪০), দুলাল মিয়া (৫৫) ও বাদশা মিয়া (৪৫) এবং সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ওয়াহিদ আলী (৪০)। বিকেলে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গেলে শোকের ছায়া পড়ে নয়টি পরিবার ও তাঁদের স্বজনদের।
নিহত রশিদ মিয়ার স্ত্রী রাছিফা বেগম বলেন, ‘ধানের কাজের সন্ধানে সিলেটে যায় আমার স্বামী। প্রায় তিন-চার দিন ধরে কাজও করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার শেষবারের মতো কথা হয়। আজ সকালে খবর পাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। ১২ ও ৮ বছরের ছেলেকে নিয়ে কীভাবে সংসার চালাব?’ এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বাদশা মিয়ার মা সেজুফা বেগম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলের মতো হয়ে গেছেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্রম ব্যক্তি ছিলেন বাদশা। শুধু বাদশা মিয়া নন, নিহত নয়জনের পরিবারই অভাব-অনটনে ছিল। তাই পেটের তাগিদে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে আর ফিরে আসা হলো না। চিরদিনের জন্য বিদায় নিয়েছেন তাঁরা।
নিহতদের পাশের বাড়ির সৈদুর রহমান তালুকদার জানান, শোকের ছায়া পড়েছে ভাটিপাড়া গ্রামে। এই ভয়াবহ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নয়টি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। সংসার চালানোর মতো তাঁদের পরিবারে আর কেউ নেই।