নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড এলাকায় দুই শতাধিক বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে গতকাল শনিবার রাতে দেশের অন্যতম বড় এই গ্যাসক্ষেত্র ঘেরাও করে এলাকাবাসী। পরে সংসদ সদস্যের আশ্বাসে ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে আজ রোববার সকালে বাড়িঘরে ফাটল দেখা দেওয়ার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সদস্যসচিব বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন ডেভেলপমেন্ট ও প্রোডাকশনের মহাব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন এবং সদস্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন।
এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র অবরোধ করে স্থানীয় কয়েক গ্রামের লোকজন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের করিমপুরে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরনের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় প্রতিদিন তিন-চারবার বিকট শব্দ ও অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়। তাতে মাটি কেঁপে ফাটল ধরেছে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের ২০ গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়িতে।
তারা জানায়, বিষয়টি একাধিকবার জানানো হলেও বিবিয়ানা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিন কাটছে স্থানীয়দের। গতকাল শনিবার রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কয়েক শ মানুষ বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড ঘেরাও করে। এ সময় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানায় স্থানীয়রা।
উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কসবা গ্রামের শ্যামল আহমেদ বলেন, গ্যাসক্ষেত্রে কৃত্রিম ভূমিকম্প ঘটানোর কারণে তাঁদের পাঁচ-ছয়টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ কারণে তাঁরা সবাই আতঙ্কে রয়েছেন। গত রাতে বাড়ির লোকজন ঘুমাতে পারেনি।
এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ লোকজন বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। কেন অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে তা দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে বলে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেভরন বাংলাদেশের মুখপাত্র শেখ জাহিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কোনো কারণে অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে বলে আমি নিশ্চিত নই। বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’