ইউরোপের দেশ গ্রিসে দুই মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ওয়াহিদ আলী নামের এক বাংলাদেশি যুবক। গত ৭ জুলাই গ্রিসে কর্মস্থল (হুন্ডি কারবারি প্রতিষ্ঠান) থেকে নিখোঁজ তিনি। দীর্ঘ সময় তাঁর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবার। পরিবারের দাবি, ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক অর্থ আত্মসাতের জন্য তাঁকে গুম করেছেন।
নিখোঁজ ওয়াহিদ হবিগঞ্জ শহরের অন্ততপুর এলাকার সিদ্দিক আলীর ছেলে। ওয়াহিদের পরিবারের সদস্যরা জানান, ৫ বছর আগে গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে ‘মিনি বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত মানোলাদার লাপ্পা গ্রামে পাড়ি জমান ওয়াহিদ। সেখানে তিনি কুমিল্লার তিন ভাই লিটন, ইদ্রিস ও কুদ্দুস মিয়ার প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশিরা অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতেন।
ওয়াহিদ আলীর ছোট ভাই আশীক আলী বলেন, ‘আমার বড় ভাই ওয়াহিদ আলী কুমিল্লার তিন ভাই লিটন, ইদ্রিস ও কুদ্দুস মিয়ার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেখানে থাকা অবৈধ বাংলাদেশিরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে না পারায় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতেন। এ সুবাদে ওয়াহিদ সকলের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। ঈদের আগে দেশে পাঠানোর জন্য ৬১ জন বাংলাদেশির লক্ষাধিক ইউরো জমা ছিল ওয়াহিদের কাছে। যা বাংলাদেশি টাকায় এক কোটির বেশি। আমাদের ধারণা সেই টাকা আত্মসাতের জন্য ওয়াহিদকে গুম করেছে তাঁর মালিকেরা।’
ওয়াহিদের বাবা সিদ্দিক আলী বলেন, ‘ওয়াহিদকে উদ্ধারের জন্য এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়া সেখানে থাকা ওয়াহিদের মামা রমিজ মিয়া স্থানীয় থানায় তাঁর মালিকদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছেন। এরপর তাঁর মালিকেরা পালিয়ে দেশে চলে এসেছে।’
মা জাবেদা খাতুন বলেন, ‘আমি কিচ্ছু চাই না। আমি শুধু আমার বুকের মানিককে চাই। আমার পুতকে (ছেলে) তুমরা আইনা দেও।’
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত লিটন মিয়া বলেন, ‘ওয়াহিদ আমাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত। সে নিখোঁজের পর তার মামা আমাদের বিরুদ্ধে অযথা মামলা করেছেন। পুলিশ অযথা আমাদের হয়রানি করতে পারে, এমনকি ধরে রিমান্ডেও নিতে পারে। তাই ভয়ে আমরা কোটি টাকার সম্পদ রেখে দেশে চলে এসেছি।’