সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাতে ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সীমান্ত নদী জাদুকাটার পানি বেড়ে যাওয়ায় তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
অব্যাহত বর্ষণ আর ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং পানি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
এদিকে গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে আজ রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ৩৩২ মিলিমিটার ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কাজির পয়েন্ট আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার আহমদ বলেন, ‘গত বছরের মতো বন্যার ভয়ে এবার পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘরের আসবাব ওপরে তুলে ফেলেছি।’
পৌর শহরের পশ্চিম হাজীপাড়ায় বাসিন্দা শুভরাজ বলেন, ‘সকালে হঠাৎ দেখি রাস্তায় পানি। এরপরে আস্তে আস্তে ঘরের সামনে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ঘরের ভেতর পানি উঠতে সময় লাগবে না।’
শহরের তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা ঝরনা বেগম বলেন, ‘গত বছরের বন্যায় মানুষের এত কষ্ট এখনো আমরা ভুলতে পারিনি। এর মধ্যে এবার আবার পানি চলে এসেছে। খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
চারদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কায় আজ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়। জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে জরুরি সভায় জেলা পর্যায়ের সব কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে যারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করবে, তাদের বসতভিটার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কাজ করবে।
এ সময় জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, ইতিমধ্যে জেলার ১২টি উপজেলায় চাল ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এলাকা বন্যাকবলিত হলে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্র যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় তিনি বলেন, জেলার সব বিদ্যালয় ও কলেজকে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।