কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি না থাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাচ্ছে শিশু ও কিশোরেরা। ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু কিশোরেরা অবাধে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সামনে প্রকাশ্যে শহর এবং আশপাশের এলাকায় বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছে এসব অটোরিকশা। সচেতন মহলের দাবি, অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ শিশু-কিশোরেরা এ যান্ত্রিক এ বাহন চালানোয় শঙ্কা বাড়ছে দুর্ঘটনার সেই সঙ্গে লঙ্ঘন হচ্ছে শিশুশ্রম আইন।
সরেজমিন দেখা যায়, কুলাউড়া পৌর শহরের প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে প্রতিদিন সহস্রাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক অটোরিকশাচালক ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু-কিশোর। আর এসব শিশু চালকের অধিকাংশ কানে হেডফোন লাগিয়ে বেপরোয়া গতিতে অটোরিকশা চালাচ্ছে শহরের প্রধান সড়কে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের নজরে পড়লেও বিষয়টি নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। এতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশু কিশোর অটোরিকশাচালক।
প্রতিবেদকের কথা হয় ১১ বছর বয়সী অটোরিকশাচালক ফয়ছাল মিয়ার সঙ্গে। সে বলছে, ‘রোজগার ভালো হয় অটোরিকশায়। পৌরসভার চাতলগাঁওয়ের মুক্তার মিয়ার অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে গত ৩ মাস ধরে চালাচ্ছি। আগে ভয় করত ট্রাফিক যদি আটকায়! কিন্তু এখন তারা কিছু বলে না।’
১৩ বছর বয়সী অটোরিকশাচালক জীবন বলছে, ‘আগে আমার বাবা চালাতেন। এখন তিনি অসুস্থ। অন্য কাজ থেকে রিকশা চালানোতে পরিশ্রম কম। তাই ৮ মাস ধরে রিকশা চালাচ্ছি।’
প্রাপ্তবয়স্ক অটোরিকশাচালক মোহন মিয়া বলেন, ‘ছোট শিশু হওয়ায় এরা রিকশার গতি নিয়ে কিছুই জানেনা। যখন-তখন ভিড়ের মধ্যে ওভারটেক করে এবং রিকশা ঘোরানোর চেষ্টা করে। এতে আমাদের রিকশা চালাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।’
পৌর এলাকার বাসিন্দা নাজমুল বারী সোহেল বলেন, ‘শিশু চালকেরা হঠাৎ করে সড়কের ওপর রিকশা ঘোরানোর জন্য প্রায়ই মোটরসাইকেল চালকেরা দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
কুলাউড়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ এনামুল হক বলেন, ‘আমি কুলাউড়ায় দুই দিন হয়েছে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আলোচনা হয়েছে। আমরা অভিযানে মাঠে নামব এবং বিষয়টি নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাব।’