সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জে বৃষ্টি না হলেও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি ঢল নামছে সুরমা নদীতে। আর নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে বন্যার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীতে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। এতে সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানির চাপ বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা।
তিনি বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। ফলে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী দুই দিন পানি কিছুটা বাড়বে বলেও জানান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে করে পানি ঢুকে পড়ছে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে। ডুবে গেছে সদর ও ছাতক উপজেলার বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক। সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওরগুলো ফুলে উঠছে। ঢলের পানি হু-হু করে ঢুকছে খাল-বিল-হাওরে। জেলার সব কটি হাওর এখন পানিতে ভরপুর।
গত বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। দীর্ঘ দাবদাহের কারণে হাওরগুলো পানিশূন্য থাকায় এত দিন বন্যার তেমন শঙ্কা না থাকলেও এখন জেলার টাঙ্গুয়ার হাওর, মাটিয়ানসহ সব হাওর পানিতে টইটম্বুর। এভাবে দু-এক দিন পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার কবলে পড়বে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা রমিজ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের বন্যার কথাই ভুলতাম পারতাছি না। এবার পানি আইলে আমাদের ক্ষতি হবে। কালকে থেকে আজকে বহুত পানি বাড়ছে।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গুয়ারচুরা গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, ‘সুরমা নদীর অবস্থা ভালো না। যেভাবে পানি বাড়তাছে, এখন পানি আসলে গরু, বাছুর রাখার জায়গা নাই। গরু-বাছুর পানিতে মারা যাইব। গত বছর বন্যায় অনেক গরু-বাছুর মারা গেছে।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের মাত্রাটা বর্তমানে বেড়ে গেছে। এভাবে যদি আগামী সাত দিন হয়, তাহলে সুনামগঞ্জে নদীর পানির লেভেল আরও বেড়ে বন্যা হতে পারে। আজ (বুধবার) ছাতক পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’