জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বাড়ির রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে চাচাকে হত্যার দায়ে দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের জামারগাঁও (মিলিক) গ্রামের লিটন মিয়া (৩৫) ও তাঁর ছোট ভাই সুমন মিয়া (৩৩)। কারাদণ্ডাদেশের বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেল।
আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেন মামলার বাদী কবির মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমার বাবাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে অনেকেই জড়িত ছিল কিন্তু আদালত সাতজনকে খালাস দিয়েছেন। আমরা আসামিদের মৃত্যুদণ্ড চাই। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আশারকান্দির জামারগাঁও গ্রামের তখলিছ মিয়া ও তাঁর চাচাতো ভাই বারিক মিয়ার মধ্যে বসতবাড়ির চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে ২০২০ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় তখলিছ মিয়া হাওর থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় পথে লিটন মিয়া, সুমন মিয়া ও তাঁদের বাবা বারিক মিয়াসহ কয়েকজন তখলিছ মিয়ার ওপর দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালান।
হামলায় গুরুতর আহত তখলিছ মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। পরদিন তখলিছ মিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওই বছরের ২৫ মে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
২০২০ সালের ২৬ মে তখলিছ মিয়ার ছেলে কবির মিয়া বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক গতকাল বুধবার ওই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার আসামি ময়না মিয়া, খোকন মিয়া, শায়েখ মিয়া, বারিক মিয়া, সোনাফর মিয়া, রুহুল আমিন ও হুসাইন মিয়াকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিন আসামি শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শিশু আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।