এস আলম সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৪৫৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ইউনিয়ন ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক। মূলত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এস আলমের নিয়োগ দেওয়া ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৬২ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অপরদিকে এস আলম গ্রুপকে নামে-বেনামে ঋণ দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১৯৪ কর্মকর্তাকে কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, গত ১৭ নভেম্বর ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় খরচ কমাতে ২৬২ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত হয়। জানা যায়, চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের সবাই গত ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নিয়োগ দিতে ব্যাংকটি কারও কোনো পরীক্ষা নেয়নি। এস আলম গ্রুপের দেওয়া তালিকা থেকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের সবাই ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার ও ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার পদের কর্মকর্তা। তাঁদের অধিকাংশই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগ থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ব্যাংক থেকে আপনার চাকরি সমাপ্ত হলেও কর্মকালে আপনার কর্মকাণ্ড, অবহেলা বা অন্য কোনো দোষের কারণে ভবিষ্যতে ব্যাংকের কোনো ক্ষতি হলে তার জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।’
অপরদিকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় ব্যাংকটি এস আলমের ঘনিষ্ঠ ২৪ শাখা ব্যবস্থাপকসহ ১৯৪ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও নামে–বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করে এস আলমকে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্যাংকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সব শাখায় বিশেষ পরিদর্শন শেষে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। শাখা ব্যবস্থাপকদের আগামী ২১ দিনের মধ্যে তাঁদের সময়ে দেওয়া ঋণ আদায়ের নির্দেশনা দিয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে ব্যাংকটির চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান মো. হাফিজুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হলে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা খায়েরও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। ব্যাংকের নিরীক্ষা বিভাগের প্রধান রফিকুল আলমও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৩৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছেন এস আলম। ব্যাংকটির আমানত ৪৫ হাজার কোটি টাকা হলেও ঋণ ৬০ হাজার কোটি টাকা। অন্য ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিয়ে সেই টাকাও লুট করেছে এস আলম গ্রুপ।