বাংলাদেশে আমদানি ও রপ্তানির খরচ ভারত, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম বা সিঙ্গাপুরের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া, লজিস্টিকস সেবার মান ও দক্ষতা এবং বাণিজ্য ও পরিবহন অবকাঠামোর মান সেসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ভালো নয় বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দক্ষতা বাড়ানো অত্যাবশ্যক।
আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘রিফর্মস ইন কাস্টমস ইনকাম ট্যাক্স অ্যান্ড ভ্যাট ম্যানেজমেন্ট টু এড্রেস দ্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ শীর্ষক সেমিনারে তাঁরা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেবিলের নিচে টাকা দেওয়া থেকে বাড়তি ভ্যাট ভালো। বাড়তি ভ্যাট দিলেও অন্যদিক থেকে কিন্তু সুবিধা মিলবে। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন খাতে কয়েকটি জায়গায় বাড়তি টাকা দিতে হবে না।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু ভ্যাটেই যাতে সীমাবদ্ধ থাকে, আমরা সেই কাজই করছি। এখন কিন্তু ঢাকা-বগুড়া ট্রাকভাড়াও কমেছে। একটু ধৈর্য ধরেন। আমরা বাড়তি ভ্যাট নিয়ে মাতারবাড়ী পোর্ট করছি, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা খরচ করছি। আমরা ভ্যাট নিয়ে নিজের পকেট ভারী করব না, জনগণের জন্য কাজ করছি।’
‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার করে যাব’ জানিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ রিফর্মগুলো আমরা করব। আমার মনে আছে, ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে একসময় টেলিফোন লাইন নিয়েছিলাম। ঘুষ যাতে না দিতে হয়, সে জন্য আমরা রিফর্ম করে যাব। ট্যাক্স, পলিসি ও ভ্যাটের রিফর্ম করব। ভ্যাটের বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন, তবে আমরা কিন্তু রিফর্ম করব।’
বিশেষ অতিথি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় স্থানীয় শিল্পের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসা এবং অভিন্ন করহার চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, সম্প্রতি অনুমোদিত স্মুথ ট্রাঞ্জিশন স্ট্র্যাটেজির সময়মাফিক ও কার্যকর বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। স্মুথ ট্রাঞ্জিশন স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য সংস্থাভিত্তিক এরূপ মাল্টিস্টেকহোল্ডার ডায়ালগের আয়োজন করা হবে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেন, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো পদ্ধতি পুরোদমে চালু হবে এবং শিগগিরই আয়কর দিতে পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় করা হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্প (এসএসজিপি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারের মূল বিষয়বস্তুর ওপর একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ও এসএসজিপি প্রকল্পের কম্পোনেন্ট ম্যানেজার ড. মোস্তফা আবিদ।